গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই উপত্যকার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে ইসরায়েল, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না।
গতকাল সোমবার মার্কিন টেলিভিশন এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু এসব কথা বলেন। যুদ্ধ শেষে গাজা কে শাসন করবে—এমন প্রশ্নে নেতানিয়াহু বলেন, তাঁর ধারণা, যুদ্ধ শেষ হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য গাজার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে ইসরায়েল।
নেতানিয়াহু দাবি করেন, ‘ইসরায়েল অনির্দিষ্টকালের জন্য সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে। (গাজার) নিরাপত্তার দায়িত্বে না থাকলে কী হয়, সেটা আমরা দেখলাম।’
ইসরায়েল নির্বিচারে গাজায় হামলা চালিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করলেও নেতানিয়াহু হামাসকে বলছেন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখলাম যে হামাস এত ব্যাপক পরিসরে এক সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা চালাল, যা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না। কৌশলগত দিক বিবেচনায় সাময়িক সময়, যেমন এখানে এক ঘণ্টা, ওখানে এক ঘণ্টার জন্য যুদ্ধে বিরতি দেওয়া যেতে পারে। আগেও আমরা এ রকম (যুদ্ধবিরতি) করেছি। এ সময়ের মধ্যে গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা প্রবেশ করতে পারবে। গাজা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন আটক ব্যক্তিরা।’
গাজা দখল করার ব্যাপারে ইসরায়েলকে আগেই সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালিয়ে যদি উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়, তাহলে সেটা হবে তাদের জন্য ‘বড় ভুল’।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। সেদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এক মাসে গাজায় ১০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ। ইসরায়েলের হামলা থেকে ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, শরণার্থীশিবির—কিছুই বাদ যাচ্ছে না।
বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা নেতানিয়াহুর প্রতি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের দাবি জানাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে হামাসও। কিন্তু নেতানিয়াহু বরাবরই দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছেন। এখনো নিজের সে অবস্থানে অটুট তিনি। এবার গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা বললেন।
আরএস