পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়ে গেল। ফল ঘোষণায় বেশি আসন পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ২৬৪ আসনের মধ্যে ১০১ টি আসন পেয়েছেন তারা।
সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি ইমরান খানের দল পিটিআই, তথা দলটির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাছাড়া, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে না পারায় সংরক্ষিত আসনের সুযোগও হাতছাড়া হতে চলেছে। সেটি বুঝে অন্য দলের সঙ্গে হাত মেলানো বা মিশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেনও পিটিআই । রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের সঙ্গে আলাপকালে পিটিআই নেতা বলেছেন, তারা এই বিষয়ের বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করে দেখছেন। তবে সম্ভাব্য জোটের জন্য দলটি অবশ্যই পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে যোগাযোগ করবে না।
গোহর বলেন, আমরা তাদের উভয়ের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তাদের কারও সঙ্গে সরকার গঠন বা একসঙ্গে সরকার গড়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না। (তাদের নিয়ে) সরকার করার চেয়ে বিরোধী দলে বসা উত্তম। তবে আমরা মনে করি, আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সরকার গঠন করতে না পারলে পিটিআই একটি ‘শক্তিশালী বিরোধী দল’ গঠন করবে বলে জানান ইমরান খানের আইনজীবী ও বর্তমান দলীয় প্রধান।
পাকিস্তানে জাতীয় বা প্রাদেশিক- যেকোনো পার্লামেন্টেই সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনের বিষয়টি পিটিআইর জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করবে।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি ৭০টি সংরক্ষিত আসন, যার মধ্যে ৬০টি নারীদের ও ১০টি অমুসলিমদের জন্য। এবার একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় মোট ২৬৫ আসনে ভোট হয়। নির্বাচনের পরে স্থগিত হয় আরও একটি আসন।
চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন সর্বোচ্চ ৯৭ আসনে; পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জয়ী হয়েছে ৭৬ আসনে; পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪ আসন এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) পেয়েছে ১৭ আসন।
নির্বাচনে বিজয়ী হতে বা সরকার গঠন করতে অন্তত ১৩৪টি আসন প্রয়োজন। এর সঙ্গে সংরক্ষিত আসন যোগ হলে লাগবে ১৬৯ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
পিটিআই তবে কার সঙ্গে হাত মেলাবে?
যেহেতু পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে জোট গড়তে পিটিআই রাজি নয়, তার মানে দলটি নিবন্ধিত অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই হাত মেলাবে। এটা পরিষ্কার।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের মতে, এর একটি বিকল্প হতে পারে জামায়াত-ই-ইসলামী (জেআই)। খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভায় দলটির তিনজন সদস্য রয়েছে। ২০১৩ সালে দল দুটি জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠনের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। যদিও, ২০১৮ সালে প্রাদেশিক সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে সেই অংশীদারত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
সেক্ষেত্রে বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে মজলিস-ই-ওয়াহদাতুল মুসলিমীনের (এমডব্লিউএম) নাম। দলটি বেশ কিছুদিন ধরেই পিটিআই শিবিরে রয়েছে। অন্যদিকে এমডব্লিউএম জাতীয় পরিষদে জিতেছে মাত্র একটি আসনে।
বিআরইউ