মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত সাতজন ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এ নিয়ে উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর থেকে কমপক্ষে ১৯৬ মানবিক ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।
মানবিক সহায়তা কর্মী হিসাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং কাজ করার জন্য কঠিন জায়গাগুলোর মধ্যে একটি’ হিসাবে বর্ণনা করে, মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক।
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের জরুরি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে ডুজারিক বলেছেন, গাজার জন্য জাতিসংঘের সিনিয়র মানবিক ও পুনর্গঠন সমন্বয়কারী সিগ্রিড কাগ, ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হওয়ার একদিন আগে গাজায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এর কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
ত্রাণকর্মীদের হত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বার্তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ডুজারিক বলেন, ‘বার্তাটি হল মানবিক কর্মীদের তাদের কাজ করতে দিন। তাদের নিরাপত্তা প্রয়োজন।’
ডুজারিক উল্লেখ করেছেন, ইসরায়েল ডব্লিউসিকে কর্মীদের ওপর হামলার তদন্ত শুরু করেছে এবং জাতিসংঘ সেই তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে।
তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলে জাতিসংঘের অনেক কর্মী নিহত হয়েছে। এরমধ্যে কিছু হামলা এমন অবস্থানে হয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই জানতো যে সেখানে ত্রাণকর্মীরা রয়েছেন। এ বিষয়ে ইসরায়েলের মন্তব্য না পাওয়াকে "খুবই আকর্ষণীয় বৈসাদৃশ্য" হিসাবে বর্ণনা করেছেন দুজারিক।
সমস্ত বেসামরিক মৃত্যুর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে, দুজারিক সমস্ত ব্যক্তিকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় মার্কিন দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) অন্তত সাতজন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, পোল্যান্ড এবং একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক রয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ডব্লিউসিকের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করেছে, তাদের দলের সাত সদস্য গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে। নিহত সাতজন ত্রাণকর্মী অস্ট্রেলিয়া, ফিলিস্তিন, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দ্বৈত নাগরিক।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
প্রায় ছয়মাস ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় ৩৩ হাজার মানুষ নিহত ও ৭৬ হাজার আহতের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি লোকের।
বিআরইউ