সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। একরাতেই ইসরায়েলে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
এদিকে ইরানের এমন হামলার ঘটনায় ইসরায়েল যে চুপ করে বসে থাকবে না তা খুব ভালো ভাবেই বোঝা যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল আসলে কী ভাবছে বা এই হামলার জবাব তারা কীভাবে দেবে সে বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রিসভা এরই মধ্যে বৈঠক করেছে। তবে তারা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে কিনা তা প্রকাশ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের মিত্ররা ইরানের এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারকে সংযম দেখানোর আহ্বানও জানানো হয়েছে।
এর আগে হোয়াইট হাউজও ইসরায়েলকে সতর্ক করে জানিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক হামলায় অংশ নেবে না। মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে গেল শনিবার রাতে হামলায় অংশ নেওয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই প্রায় সবগুলো অস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রবাহিনী। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া ‘সাবধানে’ বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইরানের ছোড়া ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইরানের হামলার সময় মার্কিন বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনী কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ৮০টিরও বেশি ড্রোন এবং কমপক্ষে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইরাকের ওপর দিয়ে ভূপাতিত করেছে।
এদিকে ইরান এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইসরায়েল বা তার সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো ধরনের প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আরও বড় আক্রমণ চালাবে তারা। অন্যথায়, সংঘাত এখানেই সমাপ্ত।
তেহরানের দাবি, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় তাদের কনস্যুলেটে হামলার ঘটনার প্রতিশোধ ছিল এই অভিযান। ওই হামলায় ইরানের শীর্ষ কয়েকজন সামরিক কমান্ডার নিহত হন। এদিকে ইরান এবং ইসরায়েলের এমন অস্থিরতা মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি করতে পারে এমন উদ্বেগ জানিয়ে বিশ্ব নেতারা সব পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিআরইউ