মিয়ানমারে ড্রোন হামলায় শিশুসহ ‘২০০’ রোহিঙ্গা নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
মিয়ানমারে ড্রোন হামলায় শিশুসহ ‘২০০’ রোহিঙ্গা নিহত
ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালানোর সময় ড্রোন হামলায় শিশুসহ বহু রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে শনিবার এ তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, সোমবার মিয়ানমারের উপকূলীয় শহর মংডুর কাছে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তে অবস্থান করছিলেন।

চারজন প্রত্যক্ষদর্শী, অধিকারকর্মী ও একজন কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ২শর বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। তবে আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, তিনি নিজে কমপক্ষে ৭০টি মরদেহ দেখেছেন।

হামলার জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনী একে অপরকে দায়ী করছে। তবে হামলার দায় অস্বীকার করেছে আরাকান আর্মি। কয়েক মাস ধরেই বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে।

রয়টার্স ভিডিওগুলোর স্থান যাচাই করে ঘটনাটি মিয়ানমারের উপকূলীয় শহর মংডুর ঠিক বাইরে ঘটেছে বলে নিশ্চিত হয়েছে। তবে কবে ভিডিওগুলো ধারণ করা হয়েছে রয়টার্স তা নিশ্চিত হতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ ইলিয়াস (৩৫) জানান, হামলায় তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও দুই বছর বয়সী মেয়ে গুরুতর আহত হওয়ার পর মারা যায়। বাংলাদেশের একটি শরণার্থী শিবির থেকে ইলিয়াস রয়টার্সকে বলেন, ‘উপকূলে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর ড্রোন হামলা শুরুর সময় তিনি স্ত্রী-সন্তানকে পাশে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘তখন আমি একাধিক গোলাবর্ষণের বিকট শব্দ শুনতে পাই।’

ইলিয়াস আরও জানান, আত্মরক্ষার জন্য তিনি মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন, যখন উঠে দাঁড়ান তখন দেখেন তার স্ত্রী ও মেয়ে গুরুতর আহত আর অনেক আত্মীয় মরে পড়ে আছেন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী শামসুদ্দিন (২৮) জানান, তিনি স্ত্রী ও নবজাতককে নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন। তিনিও বাংলাদেশের একটি শরণার্থী শিবির থেকে বলেন, হামলার পর অনেকে মরে পড়ে ছিল আর ‘কিছু মানুষ তাদের আঘাতের যন্ত্রণায় চিৎকার করছিল।’

২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের সামরিক ক্ষমতা দখলের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ও বিস্তৃত সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়। এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি হল আরাকান আর্মি।

আরাকান আর্মি রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে দখল করে নেওয়ার পর থেকে কয়েক সপ্তাহ ধরে ফের দেশ ছাড়াতে শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে বিশাল সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠী রয়েছে। 

আরএস