ট্রাম্পকে হত্যায় ইরানের ষড়যন্ত্র, আফগান নাগরিক অভিযুক্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৪, ১১:৩৭ এএম
ট্রাম্পকে হত্যায় ইরানের ষড়যন্ত্র, আফগান নাগরিক অভিযুক্ত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার কথিত ইরানি ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে এক আফগান নাগরিকের বিরুদ্ধে। 

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিচার বিভাগ ফরহাদ শাকেরির (৫১) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে, তাকে ট্রাম্পকে হত্যার জন্য ‘একটি পরিকল্পনা প্রদান’ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। খবর বিবিসির।

মার্কিন সরকার বলেছে, শাকেরিকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি এবং ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ইরানে রয়েছেন। ম্যানহাটনের আদালতে দায়ের করা ওই অভিযোগ অনুযায়ী, প্রসিকিউটররা দাবি করেছেন, ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একজন কর্মকর্তা সেপ্টেম্বরে শাকেরিকে ট্রাম্পের ওপর নজরদারি ও হত্যার পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিচার বিভাগ ইরানের শাসকগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করা একজনকে অভিযুক্ত করেছে, যাকে অপরাধী নেটওয়ার্কের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার ছক আঁকতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’

এ ছাড়া মার্কিন বিচার বিভাগ ইরানের একজন স্পষ্ট সমালোচক আমেরিকান সাংবাদিককে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে আরও দুজনের বিরুদ্ধে। তারা হলেন কার্লিসেল রিভেরা (৪৯), যিনি ব্রুকলিনের ‘পপ’ হিসেবে পরিচিত এবং স্টেটেন আইল্যান্ডের জোনাথন লোডহোল্ট (৩৬)। গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের আদালতে দুজনকে হাজির করা হয় এবং তাদেরকে বিচারের জন্য আটক রাখা হয়।

ট্রাম্প এ বছর দুটি পৃথক হত্যাচেষ্টার মুখোমুখি হয়েছেন। জুলাইয়ে পেনসিলভানিয়ায় একটি নির্বাচনি সমাবেশে একজন বন্দুকধারী সাবেক প্রেসিডেন্টকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে, যা তার কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট পাম বিচে গলফ খেলতে থাকা ট্রাম্পের দিকে রাইফেল তাক করার জন্য একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাকেরির বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, তাকে সাত দিনের মধ্যে ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল।

প্রসিকিউটরদের মতে, শাকেরি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বলেছেন, তিনি সাত দিনের সেই সময়সীমার মধ্যে ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা দিতে চাননি, তাই ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের কর্মকর্তারা বিষয়টি স্থগিত করেন।

প্রসিকিউটররা আরও জানান, শাকেরি বলেছেন, ইরান সরকার তাকে বলেছিল, নির্বাচনের পরে ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা সহজ হবে। কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল, ট্রাম্প হেরে যাবেন।

প্রসিকিউটররা শাকেরিকে একজন আফগান নাগরিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যিনি শৈশবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। ডাকাতির অপরাধে ১৪ বছর কারাগারে কাটানোর পর অবশেষে ২০০৮ সালের দিকে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

প্রসিকিউটররা বলেন, রিভেরা ও লোডহোল্টসহ কারাগার থাকা "অপরাধী সহযোগীদের একটি নেটওয়ার্ক" ব্যবহার করেছিলেন শাকেরি।

প্রসিকিউটররা আরও অভিযোগ করেন, রিভেরা ও লোডহোল্টকে আমেরিকান সাংবাদিককে হত্যার জন্য এক লাখ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যিনি ইরানের শাসনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির বিষয়ে রিপোর্ট করেছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়, আমেরিকান সাংবাদিক ও ট্রাম্প ছাড়াও ইরান সরকার নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত দুই ইহুদি আমেরিকান ব্যবসায়ীকে হত্যা করতে চেয়েছিল, যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েলকে সমর্থন করেন।

প্রসিকিউটরদের আরও দাবি করেন, শাকেরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেন, ইরান সরকারের লোকেরা তাকে গেল অক্টোবরে শ্রীলঙ্কায় ইসরায়েলি পর্যটকদের লক্ষ্য করে ব্যাপক গুলিবর্ষণের পরিকল্পনা করতে বলেছিল।

শাকেরি, রিভেরা ও লোডহোল্টের বিরুদ্ধে ভাড়াটে খুনি হিসেবে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও অর্থের বিনিময়ে হত্যার পরিকল্পনা করার অভিযোগ আনা হয়।

বিআরইউ