রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধরত ২ চীনা নাগরিককে আটক করেছে ইউক্রেন। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে তাদেরকে আটক করে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির দাবি, রুশ সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করা চীনা নাগরিকদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করা দুই চীনা নাগরিককে আটক করেছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে যে– রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চীনা সৈন্যের সংখ্যা “দুইজনের চেয়ে অনেক বেশি”।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেছেন, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে চীনা সৈন্যদের যুদ্ধ “শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চীনের ঘোষিত অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে”। তিনি আরও বলেছেন, কিয়েভে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে ব্যাখ্যার জন্য তলব করা হয়েছে।
তিন ভচরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে চীন রাশিয়াকে জনবল সরবরাহ করছে বলে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক কোনও অভিযোগ। তবে মস্কো বা বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই দাবির তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, সৈন্যদের ইউক্রেনের পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলে পরিচয়পত্রসহ আটক করা হয়েছিল। পরিচয়পত্র সংক্রান্ত ওই নথির মধ্যে তাদের ব্যাংক কার্ডও রয়েছে যেখানে তাদের “ব্যক্তিগত তথ্য” আছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের বাহিনী ছয়জন চীনা সৈন্যের সাথে লড়াই করেছে এবং তাদের মধ্যে দুজনকে বন্দি করেছে।
পোস্টটির সাথে একটি ভিডিও ফুটেজও রয়েছে যেখানে কথিত চীনা বন্দিদের মধ্যে একজনকে হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। এছাড়া তাকে চীনের ম্যান্ডারিন ভাষায় কথা বলতে এবং দৃশ্যত সাম্প্রতিক যুদ্ধের বর্ণনা করতেও দেখা যাচ্ছে।
জেলেনস্কি বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে যে– দখলদারদের (রুশ বাহিনীর) ইউনিটে এই দুজনের চেয়ে আরও অনেক বেশি চীনা নাগরিক রয়েছেন।”
জেলেনস্কি আরও বলেন, “ইউরোপের এই যুদ্ধে চীন এবং অন্যান্য দেশের সাথে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে– পুতিন যুদ্ধ বন্ধ না করে অন্য কিছু করতে চান।”
এই ঘটনায় “যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং বিশ্বজুড়ে যারা শান্তি চায় তাদের সকলের কাছ থেকে” প্রতিক্রিয়া চেয়েছেন ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট। তিনি আরও বলেন, এই বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং বন্দিরা বর্তমানে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধরত ২ চীনা নাগরিককে আটক করার ঘটনাকে মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস “বিরক্তিকর” বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া যে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে চীন তার “প্রধান সহায়ক”। এছাড়া তিনি ন্যাভিগেশন সরঞ্জাম, সেমিকন্ডাক্টর চিপ এবং জেট যন্ত্রাংশের মতো দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্যও চীন থেকে রাশিয়ায় সরবরাহের কথা উল্লেখ করেছেন।
আরএস