- নিলাম হওয়া ছয়জনই বিকেএসপির শিক্ষার্থী
- বাফুফের একাডেমিতে রয়েছেন বিকেএসপির ৩১ শিক্ষার্থী
- মেয়েদের ক্যাম্পে রয়েছেন ১৭ জন
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন; অনিয়মের অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছেই না। একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বাসা বাঁধছে এই ভবনটিতে। সোহাগকাণ্ডের পর দীর্ঘদিন সমালোচনা হয়েছে ফুটবল পাড়ায়। মেয়েদের ফুটবল নিয়েও সমালোচনা কম হয়নি। তবে সব কিছু ছাপিয়ে বেতন বাড়ানো হয়েছে মেয়েদের। তাই আপাতত মেয়েদের ফুটবল নিয়ে হচ্ছে না কোনো সমালোচনা। তবে নতুন করে আবারও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ফেডারেশন।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপির তৈরি করা ফুটবলার বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এমন অভিযোগ উঠেছে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। গত ২৬ আগস্ট রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ঘটা করে নিলাম অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাফুফে। সেখানে বাফুফের এলিট একাডেমির ১০ জন ফুটবলারকে নিলামে তোলা হয়েছিল। এর আগে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ক্লাব এলিট একাডেমির খেলোয়াড়দের চেয়েছিল ফেডারেশনের কাছে। তবে বিনা লাভে খেলোয়াড়দের দিতে রাজি হয়নি ফেডারেশন। তাই তো দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিলামের আয়োজন করে বাফুফে। সেখানে যে ১০ ফুটবলার বিভিন্ন ক্লাবের কাছে বিক্রি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ছয়জনই বিকেএসপির বর্তমান শিক্ষার্থী।
এছাড়া একজন আছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ছাত্র। বিকেএসপি সূত্রে জানা গেছে, বাফুফের একাডেমিতে তাদের ৩১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। মেয়েদের ক্যাম্পে আছেন মোট ১৭ জন। এক কথায় বাফুফের ছেলে ও মেয়ে দুটি একাডেমিই বকেএসপির সহযোগিতায় পরিচালিত হয়। যদিও এর পুরো কৃতিত্ব নিয়ে থাকে বাফুফে। বিকেএসপি বাফুফেকে খেলোয়াড় দিয়েছে কিছু শর্তসাপেক্ষে। যে শর্তের প্রধান হচ্ছে কোনো খেলোয়াড় ক্লাবে খেললে চুক্তি হতে হবে বিকেএসপির সঙ্গে। বাফুফে সেই শর্ত ভঙ্গ করে নিজেরাই ফুটবলার বিক্রি করে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করেছে। বিকেএসপির দেয়া শর্তের মধ্যে আরও আছে- তিন মাস পরপর তাদের শিক্ষার্থীরা ফিরে আসবে এবং কমপক্ষে সাতদিন থেকে আবার যাবে। পাশাপাশি কারো পরীক্ষা থাকলে নির্দিষ্ট একটা সময়ে বিকেএসপিতে পাঠাতে হবে। বাফুফে যে ১০ ফুটবলারকে নিলামে বিক্রি করেছে তার মধ্যে অনন্ত বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন সাজেদ হাসান জুম্মন, সিরাজুল ইসলাম রানা, রুবেল শেখ, ইমরান খান, মিরাজুল ইসলাম ও আসাদুল মোল্লা।
বিকেএসপি সূত্রে জানা গেছে, খেলোয়াড়দের নিলামে তোলার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাফুফেকে নোটিস দিয়েছিল বিকেএসপি। ফুটবলারদের যখন ফাইনাল চুক্তি হবে সেখানে যেন বিকেএসপির দেয়া শর্তগুলো উল্লেখ করা হয়। তবে ফেডারেশন সেই শর্ত মানেনি। বাফুফে বিকেএসপির খেলোয়াড় বিক্রি করে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে। সেই লাভের অংশ বিকেএসপি পাবে কি না তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। জানা গেছে, এ বিষয় নিয়ে বাফুফের সঙ্গে আলোচনা করবে তারা।
বাফুফে থেকে বলা হয়েছে, খেলোয়াড়দের বিক্রির বিষয়ে বিকেএসপির যদি কোনো কথা থাকে সেটা বাফুফেকে জানাতে বলা হয়েছে। তারা কি চায় সেটা অফিসিয়ালি জানতে হবে। বাফুফে দুই বছর ধরে এই খেলোয়াড়দের নার্সিং করে আসছে। বিকেএসপির ছয় ফুটবলার কে কত টাকায় কোন ক্লাবে বিক্রি হয়েছেন তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো। সাত লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ফরোয়ার্ড আসাদুল মোল্লাকে কিনেছে আবাহনী লিমিটেড। সাত লাখ ২৫ হাজার টাকায় সাজেদ হাসান জুম্মনকে নিয়েছে ফর্টিস এফসি। ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকায় ফরোয়ার্ড মিরাজুল ইসলামকে কিনেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। চার লাখ টাকা করে লেফটব্যাক সিরাজুল ইসলাম রানা, রাইটব্যাক রুবেল শেখ ও সেন্টারব্যাক ইমরান খানকে দলে ভিড়িয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।