হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় ৬৮ কেজি গোল্ডবারসহ আটক বিমান কর্মকর্তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে দশ দিনের নিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুর রাকিব তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার রাত ১০ টায় বিমানবন্দরের হ্যাংগারের সামনে থেকে বিমানের এয়ারক্রাফট মেকানিক শফিকুল ইসলামকে আটক করে আর্মড পুলিশ। এসময় তার কোমরে লুকানো অবস্থায় ৬৮ টি গোল্ডবার পাওয়া যায় যার ওজন ৭ কেজি ৮৮৮ গ্রাম। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, রোববার নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের এপ্রোন সাইডে নজরদারি করছিল এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সাদা পোষাকে গোয়েন্দা দল। সন্ধ্যা ৭ টায় বাংলাদেশ বিমানের কুয়ালালামপুর থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইট বিজি ৩৮৩ ঢাকায় অবতরণ করে। সকল কার্যক্রম শেষে বিমানটি রাতে ৯:৩০ মিনিটে হ্যাংগারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং হ্যাংগারের সামনে পার্ক করে রাখা হয়। বিমানের টেকনিশিয়ান, ক্লিনার এবং অন্যান্য স্টাফরা তাদের কাজ শেষ করে একে একে বিমান ত্যাগ করলেও বিমানটির দিকে নজর রাখছিল এপিবিএন। বিমানের সকল কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর রাত ১০ টায় যখন বিমানে আর কেউ ছিল না, তখন খুবই দ্রুততার সাথে বিমানের এয়ারক্রাফট মেকানিক অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে বোয়িং ৭৭৭ মডেলের এই উড়োজাহাজে উঠতে দেখা যায়। তার চলাচলের ধরণ এবং মুভমেন্ট দেখে সন্দেহ হয় এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দলের। কিছুক্ষণের মধ্যেই যখন সে নেমে আসে এবং দ্রুততার সাথে স্থান ত্যাগের চেষ্টা করে তখন তাকে আটক করা হয়। আটকের পর তাকে হ্যাংগারের সামনেই বিভিন্ন এজেন্সির উপস্থিতিতে তল্লাশী করা হয়। এসময় তার কাছে উল্লেখিত ৬৮ টি গোল্ডবার পাওয়া যায়। এ সকল গোল্ডের ব্যাপারে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নাই। জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল জানান, তিনি বিমানের ডগ বক্স থেকে এই গোল্ড সংগ্রহ করেন বলে জানান। কিন্তু এই গোল্ডের গন্তব্য সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সুস্পষ্ট কোনো তথ্য না জানিয়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যহীন কথাবার্তা বলতে থাকেন।
উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বাজারমূল্য ৭ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। আটককৃত বিমানের এয়ারক্রাফট মেকানিক শফিকুল ইসলাম (৩৩) ২০১৩ সালে ক্যাজুয়াল স্টাফ হিসেবে বিমানে যোগদান করেন এবং ২০১৭ সালে স্থায়ী হন। তিনি খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার অধিবাসী। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা দায়েরে প্রস্তুতি চলছে।
আরএস