ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল

আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৩, ০৭:৪৭ পিএম
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিককল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিচারপতি জাফর আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ রুল খারিজ করে এ আদেশ দেন। ১০৬ শ্রমিক চাইলে শ্রম আদালতে গিয়ে মামলা করতে পারবেন বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে, ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

গ্রামীণ কল্যাণ থেকে চাকরিচ্যুত ১০৬ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ পরিশোধ করতে গত ৩ এপ্রিল রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূস। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ মে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন হাইকোর্ট।

অন্যদিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় নিজের যুক্তি তুলে ধরতে আজ বিকেল ৩ টায় শেখ মেরিনা সুলতানার তৃতীয় শ্রম আদালতে ৫ম বারের মতো হাজির হন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকেল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত চলে যুক্তি উপস্থাপন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে এদিন  শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত কোন রায় দেননি। পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আগামী ৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়।

এ বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা অবৈধ। একমাত্র শ্রম চিপ-পরিদর্শক মামলা করতে পারবেন। কিন্তু মামলা করেছেন পরিদর্শক। পরিদর্শককে অথরিটি নেওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেননি। আইন অনুযায়ী যেদিন মামলা হাইকোর্টে দেখাবেন সেদিন অথরিটি দেখানোর কথা থাকলেও মামলার ২ বছর পর অথরিটি দেখানো হয়।

তিনি আরও বলেন,  শ্রম আদালতের আইনে বিধানে রয়েছে “কোট কোন অথরিটি না দেখে মামলা নিতে পারবে না ” অথচ ক্ষেত্রে মামলা নেওয়া হয়েছে। যা পুরোপুরি অবৈধ।

আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রামীণ কল্যাণ তিন বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। গত ২০ বছরে কোন কর্মিকে চাকুরিচূত্যত করা হয়নি। শ্রম আইনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধিান রয়েছে। সেটি করেছে গ্রামীণ টেলিকম।

তবে বাদী পক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন ড. ইউনূস কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়া আদালতের ৩৫ মিনিট সময় নষ্ট করা হয়েছে। যে যুক্তি হাইকোর্টে উপস্থাপন হয়েছে এবং হাইকোর্ট তা বাতিল করে দিয়েছেন, সে যুক্তিগুলো পুনরায় উপস্থাপন করে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।

আসামি পক্ষের আইনজীবীর অভিযোগের জবাবে এই আইনজীবী আরও বলেন,  ‘৩০৫ ধারায় পরিদর্শক মামলা করতে পারবেনা, চিপ-পরিদর্শক মামলা করতে পারবেন’ বলে যে বিষয়টি তারা বলছেন সেটি নিয়ে তারা আদালতে গিয়েছেন। আদালত সেটিকে খারিজ করে দিয়েছে।  

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. ইউনূস সহ চারজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর।

আরএস