- আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে প্রারম্ভিক বক্তব্যে সাবেক এটর্নী জেনারেল এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দেশে আজ হীরক রাজার অবস্থা বিরাজ করছে। হীরক রাজার দেশ সিনেমাটি ১৯৮০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে। সত্যজিত রায়ের এই চলচ্চিত্রে স্বৈরাচার কিভাবে পরিচালিত হয় সেটা আমরা দেখেছি।
কৃষকের মন্ত্র, শ্রমিকের মন্ত্র এবং শিক্ষকের সেখানে আছে। স্বৈরাচার পতনের কথাও সেই সিনেমায় আছে।এই সিনেমার শেষ বক্তব্য --
‘দড়ি ধরে মার টান,
রাজা হবে খান খান।’
আজ রাজা কে খান খান করার জন্য আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছি।
সংসদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার’ এই তিনটি মূলমন্ত্র নিয়ে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কে ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে এক ব্যক্তি সকল ক্ষমতার মালিক বনে গিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫২ বছর পর শেখ হাসিনা আজ নিকশ কালো বাকশাল- ২ কায়েম করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি সরকার আরেকটি নীল নকশার পাতানো ডামি নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। কথিত এ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর জন্য সরকারি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী , বিদ্রোহী প্রার্থী, ডামি প্রার্থী এবং অনুগত প্রার্থী প্রভৃতি এক রকমের প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ ভোট ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নাগরিকদের উপর সরকারের পেটো বাহিনী ক্রাকডাউন করেছে। সরকার আজ পর্যন্ত বিরোধীদলের ২৩৪৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে ৬৮৪টি। গত ১৬ সপ্তাহে ১৪৮২ জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।’
সমস্ত আদালত বর্জনের ঘোষণা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দেশ ও জাতিরে চরম যুগসন্ধিক্ষণে দেশের বৃহত্তম এবং জনপ্রিয় আইনজীবী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম শেখ হাসিনার পদত্যাগ, নির্বাচন বর্জন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ, সমস্ত জেলা আদালত, সেশন আদালত, মুখ্য মহানগর হাকিমদের আদালত, মুখ্য জুডিসিয়াল আদালতসহ সমস্ত আদালত বর্জন করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে মাননীয় প্রধান বিচারপতি সহ সকল বিচারকদের কাছে আদালত বর্জনের সিদ্ধান্তের চিঠি হস্তান্তর করা হবে।
সরকার বা সরকারের অনুচরদের ফাঁদে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক কর্মসূচি সফল করতে সকল আইনজীবী সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সাবেক এটর্নী জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, এডভোকেট ফজলুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট নিতাই রায়, এডভোকেট মহসীন রশিদ, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, এডভোকেট আবেদ রাজা,সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদল, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, এডভোকেট মোঃ আলী,কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, এডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, সৈয়দ মামুন মাহবুব, এডভোকেট পারভেজ হোসেন প্রমুখ।
এআরএস