বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার মূল সমস্যা উল্লেখ করে উত্তরণের উপায় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, বাংলাদেশের আদালত আজকে ৪০ লাখ মামলার ভারে জর্জরিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা রাউন্ড- ব্রেকিং টেকনোলজিকাল ইনোভেশন সিস্টেমের উপর ফোকাস করছি এবং মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করছি।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনের প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভুটান ও নেপাল কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বীকৃতিদানের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেন।
পিপলস জুডিশিয়ারি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পিপলস জুডিশিয়ারি ধারণাটি এমন একটি ধারণা, যা সংখ্যালঘুসহ সকল নাগরিকের সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে এবং সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারগুলো রক্ষা করে।
তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা আধুনিকায়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি কক্সবাজারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জমি বরাদ্দ দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সম্মেলনের প্রথম সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন।
এ সময় আইন মন্ত্রী বলেন, এই অধিবেশন দক্ষিণ এশিয়ার বিচারব্যবস্থার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা নিজেদের মধ্যে সংলাপে অন্তর্ভুক্ত হওয়া, ক্রস বর্ডার ঐক্য গড়ে তোলা এবং বৃহত্তর সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং তা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। সংবিধান অনুযায়ী ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর তাই দেশে আজ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভুটানের হাইকোর্টের বিচারপতি লোবজাং রিনজিন ইয়ার্গে বলেন, ব্যক্তির মানবাধিকার রক্ষায় আইনের শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের মূলভিত্তি।
তিনি বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং সকলেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। আইন বাস্তবায়ন করা না হলে ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচারের উৎস হয়ে উঠে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আপিল বিভাগের বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের প্রাক্তন বিচারপতি এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার কর্মকর্তারা।
ইএইচ