এক ছাদের নিচে থাকলেও সঙ্গীর মনের অসুখ কিংবা ভালো লাগা মন্দ লাগা বোঝার ক্ষমতা অনেকেরই নেই। সারাক্ষণ অভিযোগ আর অভিমানে সম্পর্কের শেষ পরিণতি হয় বিবাহ বিচ্ছেদ। তবে যখন মনে হয় বিচ্ছেদ ছাড়া আর কোনো পথ নেই, তখনও পরিস্থিতি বদলে ফেলার উপায় আছে। জেনে নিন ভাঙতে বসা বিয়ে টেকানোর সাত কৌশল।
মাথা ঠাণ্ডা রাখুন:
যদি আপনার সঙ্গী আপনাকে বিচ্ছেদের হুমকি দিয়ে ফেলে কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তাহলে মানসিকভাবে অস্থির হয়ে পড়াই স্বাভাবিক। কিন্তু তা বুঝতে দেয়া যাবে না। মনকে শান্ত করার চেষ্টা করুন, নিজেকে শান্ত দেখানোর চেষ্টা করুন। গরম মেজাজে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। ঠাণ্ডা মাথায় সমাধান খুঁজুন।
‘ভিকটিম গেম’ খেলবেন না:
আপনার সঙ্গীকে অপরাধ বোধে ভোগানোতে ‘ভিকটিম গেম’ খেলবেন না। এতে সঙ্গী বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেও আপনার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না। ভালোবাসার জন্য নয়, শুধু মাত্র অপরাধ বোধের কারণে টিকবে সেই সম্পর্ক। সেরকম সম্পর্ক কে যায় বলুন? এরকম পরিস্থিতিতে নিজেকে হেরে যাওয়া মানুষ না ভেবে নিজের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবুন। সঙ্গীকেও সেই ধারণা দিন। এতে আপনাকে ছেড়ে গেলে কী কী অসুবিধা হতে পারে সেটা ভাবার সুযোগ থাকবে তার। মুখের জোরে সম্পর্ক টেকানোর চেষ্টা করে লাভ হবে না। বরং কাজের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রমাণ করুন। ছোট ছোট কাজে সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন। তার সঙ্গে থাকা সময়টা আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা জানিয়ে দিন। খুব সামান্য এসব কাজেই সম্পর্কের তিক্ততা কমে যায় অনেকটাই।
বদলানোর তালিকা তৈরি করুন:
আপনার সঙ্গী আপনাকে নিয়ে যা যা অভিযোগ করেছে তার একটি তালিকা তৈরি করুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন সম্পর্কের অবনতির সূত্রপাত কোন জায়গা থেকে। আপনার কোন কোন আচরণে সঙ্গী আঘাত পায় সেগুলো এড়ানো সহজ হবে তালিকা তৈরি করে নিলে।
অতীত ভুলে যান:
ঠিক কোন কারণে আপনার সঙ্গী বিচ্ছেদ চাইছেন তা জানার চেষ্টা করুন। নিজেদের মাঝে কোনো ভুল বোঝাবুঝি আছে কিনা কিংবা আপনার সঙ্গী মনে কোনো কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছেন কিনা তা জানার চেষ্টা করুন। নিজের মনে অতীতের কোনো ঘটনার ক্ষোভ জমে আছে কিনা তাও ভাবুন। অতীতে যা হয়েছে সব বাদ দিন, ভুলে যান। সামনের দিনগুলো নিয়ে ভাবুন। ভুল থেকেই শিখতে হয়।
আত্মবিশ্বাস:
যদি কখনো মনে হয় আপনি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য নন, তাহলে আপনি ভুল। মন থেকে সব ধরণের নেতিবাচক চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুন।
নিজেকে ভালো সঙ্গী হিসেবে গড়ে তুলুন:
একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করুন। দুজনেই কিছু ছাড় দিন। রাগের কারণে সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে যায়, রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন। দুজনই ইতিবাচক থাকুন। নেতিবাচক চিন্তা ও সিদ্ধান্ত থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
নিজের সেরা ভার্সন হয়ে দেখান:
প্রতিযোগিতাটা নিজের সঙ্গে নিজের হোক। নিজেকে নিজের সবচেয়ে ভালো ‘ভার্সন’ হিসেবে তৈরি করুন। নিজেকে পরিপাটি রাখুন, আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুন। ইতিবাচক মনোভাবের বন্ধু ও পরিচিতজনদের থেকে অনুপ্রেরণা নিন। এতে সম্পর্কের মোড় ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মূলত পারস্পারিক বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ বোঝাপড়ার উপর সম্পর্কের ভালো মন্দ নির্ভর করে। এগুলোকে যে কোনো সম্পর্কের মৌলিক ভিত্তিও বলা হয়। এর কোনো একটির ঘাটতি দেখা দিলেই সম্পর্ক বিচ্ছেদের দিকে যেতে থাকে। তখন আর কোনো টোটকাই কাজ করে না।
সূত্র: লিস্টাকা