জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর ২৫তম সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠিত

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৩, ০৭:৩৭ পিএম
জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর ২৫তম সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠিত

সারাদেশের চারুশিল্পীদের অংশগ্রহণে ২৮ মে থেকে ১৭ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত চলা ২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী-২০২৩ এর আনুষ্ঠানিক সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পর্যায়ে সারাদেশের চারুশিল্পীদের অংশগ্রহণে শুরু হয় ২৫তম এ জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৩।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এ সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান, মাননীয় উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন -"চারুশিল্পে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন ঘাটতি যেন না থাকে সেদিকে গুরুত্ব  দিতে হবে।" শিল্পকলা একাডেমি পূর্বের তুলনায় শিল্পচর্চার ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিল্পকলা একাডেমি কাঠামোগতভাবেও সম্প্রসারিত হয়েছে, পূর্বের তুলনায় এর পরিধি বেড়েছে,  গ্যালারির সংখ্যা বর্ধিত হয়েছে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শিল্প সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। প্রদর্শনীর শিল্পকর্ম বিষয়ে পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন শিল্পী মোস্তফা জামান মিঠু। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো বিষয়ে নতুন প্রজন্মের কাজের ধরণ ও সময়ের সাথে চিন্তার পরিবর্তন ও  শিল্পকর্মে সেসব চিন্তাধারার প্রতিফলন ফুটে ওঠার বিষয়গুলো তুলে ধরেন তিনি।

চারুকলা প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্ম গুলো পর্যালোচনা করে তিনি বলেন- "আমাদের দেশের লেখাপড়ার ধরন থেকে শিল্পকলা একাডেমির শিল্পকাজ অনেক এগিয়ে আছে"।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন -"অনান্য মিউজিয়ামের মতো স্থায়ী গ্যালারি করতে চাই।" একাডেমিতে সব শাখার শিল্পীদের চর্চা ও অনুশীলন করার জায়গা আগামি ১ বছরের মধ্যে তৈরী হয়ে যাবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। 

চারুশিল্পে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি উল্লেখ করে তিনি বলেন - "বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।" এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম।

সবশেষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সম্মানিত সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ। পরে ৭ জন কিউরেটরের মধ্যে উপস্থিত ৪ জনের হাতে সনদপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি।

১৯৭৪ সালে সমকালীন চিত্রকলা প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিষয়ক কর্মকান্ড শুরু হয়। এ কর্মকান্ডের সূত্র ধরে ১৯৭৫ সালে শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবংচারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় প্রথম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর যাত্রা শুরু হয়। প্রতি দুই বছর পর পর এ প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ মে ২০২৩ শুরু হয়েছিলো ২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৩।

দেড় মাসের অধিক সময় ধরে চলা এ প্রদর্শনীর আজ সফল সমাপ্তি ঘটলো। ২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৩ নীতিমালা অনুযায়ী ২১ বছরের উর্দ্ধে বাংলাদেশের চারুশিল্পীদের নির্বাচিত এসকল শিল্পকর্মের মধ্যে ছিলো চিত্রকলা ৯৬টি, ছাপচিত্র ৩৯টি, আলোকচিত্র ২২টি, ভাস্কর্য ৬০টি, প্রাচ্যকলা ৪টি, মৃৎশিল্প ৬ টি, কারুশিল্প ১০টি, গ্রাফিক ডিজাইন ৭টি, স্থাপনা শিল্প   ৩৮টি, নিউ মিডিয়া আর্ট ১১টি, পারফরমেন্স আর্ট ৩টি।

এর আগে উদ্বাধনী আয়োজনে ২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৩ এ প্রত্যেকটি মাধ্যমে একটি করে মোট ১১টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেয়া হয়। আর সকল মাধ্যম মিলিয়ে ‘‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার ২০২৩” শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

উল্লখ্য যে মাধ্যম ভিত্তিক প্রতিটি শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের জন্য এক লাখ টাকা এবং সকল মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের জন্য দুই লাখ টাকা এবং গোল্ড মেডেল, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এছাড়াও পাঁচটি সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হয় যার প্রতিটির মূল্যমান পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং তার সাথে ছিলো স্পন্সরশীপ পুরস্কার।

এইচআর