গাড়ি মেরামত করতে করতেই স্পোর্টস কার বানিয়ে ফেলেছেন মেকানিক আবদুল আজিজ। কোনো রকম পুঁথিগত বিদ্যা ছাড়াই কেবল কাজের অভিজ্ঞতা আর সাধারণ জ্ঞান-বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে তিনি বিশ্বখ্যাত ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেলের মতো দেখতে একটি স্পোর্টস কার তৈরি করে হইচই ফেলে দিয়েছেন।
হলুদ রঙের আকর্ষণীয় গাড়িটি দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমেছে। সবাই অবাক আজিজের কেরামতিতে। ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকায় শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপে শ্রমিকের কাজ করেন আবদুল আজিজ। তার বাড়ি জামালপুরের বকশিগঞ্জের নিলক্ষ্মীয়া ইউনিয়নের জাকনিপুর গ্রামে।
আড়াই দশক ধরে মোটর ওয়ার্কশপে কাজ করছেন আজিজ। মোবাইল ফোনে ইতালিয়ান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ল্যাম্বরগিনির তৈরি বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল ও জনপ্রিয় স্পোর্টস কারের ছবি দেখে সেই আদলে গাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন একসময়। এরপর ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০-এর আদলে গাড়ি তৈরির কাজ শুরুও করে দেন। এ কাজে আজিজকে সহায়তা করেন ময়মনসিংহ নগরীর আকুয়া ওয়ারলেস মোড় এলাকার ফালু ড্রাইভারের ছেলে মেকানিক আরাফাত ইসলাম ইমন। ১৫ লাখ টাকা খরচে ১৫ মাসে তৈরি হয়েছে আজিজের স্বপ্নের এই গাড়ি।
নগরীর মাসকান্দা এলাকায় শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপের সামনে শোভা পাচ্ছে স্পোর্টস কারটি।
গাড়ি নির্মাতা আবদুল আজিজ জানান, ঢাকায় ২১ বছর কাজ করার পর গত ৪ বছর ধরে ময়মনসিংহের শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপে কাজ করছেন। কাজ শুরুর পর অনেকের উপহাসের পাত্র হয়েছেন। তবু হাল ছাড়েননি।
আজিজ বলেন, ‘২০২১ সালে টয়োটা স্টারলেট পুরোনো গাড়ি সংগ্রহ করি। সেই গাড়ির বাইরের অংশ বাদ দিয়ে ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেলের আদলে নান্দনিক ডিজাইনে গড়ে তুলতে পুরোদমে কাজ শুরু করি। এরপর দীর্ঘ ১৫ মাসের প্রচেষ্টায় তৈরি হয় ১৫০০ সিসির গাড়িটি, যা ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে।’
আবদুল আজিজ বলেন, ১১ লাখ টাকা ব্যাংক লোনসহ মোট ১৫ লাখ টাকা খরচ করে স্বপ্নের গাড়িটি বাস্তবে রূপ দিয়েছি। হেডলাইট, টেইল লাইট, বডি ডিজাইন, সিটের গঠন ঠিক ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেলের গাড়ির মতোই। আসল ‘ল্যাম্বরগিনি’র মতো গাড়ির দরজাগুলোও খুললে উঠে যায় ওপরের দিকে। গাড়িটির বাহ্যিক কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলেও ভেতরে এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। গাড়িটি যেন সড়কে চলার অনুমতি পায় সেজন্য সরকারের সহায়তা চান তিনি।
এআরএস