সবায় ঘর পায় হামরা পাই না  

আল-আমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২২, ০৪:০৮ পিএম
সবায় ঘর পায় হামরা পাই না  

মোরশেদা খাতুন, মুন্না, কোরবান আলী, রাজ্জাকুল, মুরাদ ওরা এখনও ভূমিহীন। সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন এলাকায় তাদের বাড়ি। তাদের কোনো জমি ও ঘর নাই। অন্যের জমিতে ঘর বানিয়ে বসবাস করেন। তাদের ৬টি মৌলিক চাহিদার মধ্যে ৫টি পূরণ হলেও একটি চাহিদার অভাব তাদের সবসময় সেটি হল বাসস্হান নিজের একটি নিরাপদ আশ্রয়।

মোরশেদা খাতুন বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের আবাসনে থাকেন। তিনি জানান, আমার ভাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ পান আমার ঘর না থাকায় ভাইয়ের বাসায় আশ্রিতা হিসাবে  আমিও থাকি, থাকতে খুব কষ্ট হলেও থাকতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পে আমি যদি একটি ঘর পাই তাহলে কষ্ট করে গাদাগাদি করে থাকতে হতো না।

বোতলাগাড়ী ইউনিয়রে সরকার পাড়া এলাকার বাসিন্দা কোরবান আলী (৩৫) কাজ করেন খাবার হোটেলে দুই ছেলে নিয়ে ৪ জনের পরিবার বসবাস করেন অন্যের জমিতে। দিন মজুরী করে সংসার চালান একদিন কাজ না করলে পেঠে ভাত জুটে না। কোথাও জমি কিনে বাড়ী করবে সেই সামথ্য নেই। জমির মালিক বারংবার জমি খালি করার তাগিদ দেন। কোরবান এর স্ত্রী নুরবানু(৩৩) আক্ষেপ নিয়ে জানান সবায় ঘর পায় হামরা পাই না। হামার তো কিছুই নাই, হামরা কি ঘর পামো না। ডেলিভারী ম্যান মুরাদ হোসেন (৪০) প্রতিদিন দোকানে দোকানে মালামাল দিয়ে বেড়ান শহরের চাঁদনগর এলাকায় নানির বাড়িতে। 

তিনি জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর মা নানার বাড়িতে চলে আসেন ছোট থেকেই নানার বাড়িতে আছি। কিন্তু এক ঘরে ৫ জনের থাকা খুবই সমস্য আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের বয়স ১৪ বছর এক ঘরে থাকার কোন পরিবেশ নাই। যে ছোট কাজ করি তাতে করে কোথাও বাসা ভাড়া বা জমি নিয়ে বাড়ি করার সামথ্য নেই। অল্প রোজগার দিয়ে ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা চলাতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি ঘর পেলে অনেক উপকার হতো।

মুন্না (৩০) কাজ করেন ট্রলির লেবার হিসাবে দিন শেষে চারশত টাকা হাজিরা পান। কোন রকম করে চলে সংসার, মাথা গোজার থাই নাই থাকেন শশুর বাড়িতে। তার সঙ্গে কথা হলে জানান, আমি দিন মজুরের কাজ করি ইচ্ছা থাকা সত্বেও ভালো মন্দ খেতে পারি না। থাকি শশুর বাসায় থাকতে ইচ্ছা করে না কিন্তু নিরুপায়। শুনেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নতুন করে বোতলাগাড়ীতে আবাসন এর ঘর করছে, আশ্রয়ন এর ঘরের জন্য আমি আবেন করেছি। যাচাই বাছাই করে যদি আমি ঘর পাওয়ার যোগ্য হই তাহলে আমি অনেক উপকৃত হতাম।

এ ব্যাপারে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ১নং ওয়াডের স্হানীয় বাসিন্দা মোতালেব হোসেন জানান, বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে ভূমিহীনদের সংখ্যা নেহাতে কম নয়। বাসস্হানের অধিকার সবার রয়েছে প্রকৃত পক্ষে যারা ভূমিহীন তাদের আবাসনের ব্যাবস্হা করলে তারা উপকৃত হবেন, তাদের হবে নিজস্ব একটি স্হায়ী ঠিকানা।

কেএস