নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে তা প্রতিরোধ করতে রাইফেল নিয়ে আসার বক্তব্যটি কৌতুক ছিল বলে জানিয়েছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সোমবার (১৮ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসে এমন ব্যাখ্যা দেন সিইসি।
এ সময় মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতো সমালোচনার পর কাজ করার মনোবল থাকে না। ইচ্ছেও করে না।
সম্প্রতি ইভিএম নিয়ে ইসির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে আসেন। বৈঠকে তাঁকে স্যার সম্বোধন করার বিষয় এবং মূল ফটক থেকে রিসিভ করার বিষয় নিয়েও সমালোচনার কথা তোলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ইভিএম নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে সব দলের সব নেতাদেরকেই স্যার বলেই সম্বোধন করেন সিইসিসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা। এছাড়া সব দলকেই মূল ফটক থেকে রিসিভ করা হয়।
সিইসি বলেন, আমাদের অফিসারকে বলা হয়েছে রিসিভ করার জন্য। কমিশনাররা কিন্তু মন্ত্রীকে রিসিভ করেননি। যেহেতু আগেও পরিচিত, আমি উনাকে (ওবায়দুল কাদের) স্যার সম্বোধন করেছিলাম, এটাও সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছি। এটা বিনয়ের কারণেই স্যার বলেছি, তারপর শিখলাম যে স্যারও বলা যাবে না।
তিনি বলেন, আরেকটা জিনিস কালকে (১৭ জুলাই) যেটা হলো। আজকে যদি বিদায় নিতে পারতাম খুব ভালো লাগতো। সব ইংলিশগুলো, পেপার এটা করলো। আমি মিডিয়ার স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করি। আমি-আপনি বসে আছি। উনিও খুব হাস্যোজ্জল ব্যক্তি, উনার নাম ববি হাজ্জাজ (জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান)। উনি প্রসঙ্গক্রমে অস্ত্রের কথা বললেন। আমি বললাম আপনি বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। কারণ ওরা তলোয়ার নিয়ে এলে আপনিও বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা কী কখনো মিন করা হয়। একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কী এতটুকু জ্ঞান নেই, যে এখনই কিন্তু পারেন আর্মস অ্যাক্টে অ্যারেস্ট করতে। ওই কথাটা যদি সত্যি হয় তাহলে আমি কিন্তু অস্ত্র আইনে গ্রেফতার হই, যে আমি অস্ত্র আইনের ইয়ে করেছি। পুলিশ এসে আমাকে একেবারে নিয়ে যাবে। একটা কথা আছে- যে এটা কী অন্তর থেকে বলা হয়েছে, নাকি কৌতুক করা হয়েছে, এগুলো বুঝতে হবে।
সিইসি বলেন, এটা নিয়ে পেপারে প্রধান খবর, একটা মানুষকে নামিয়ে দেওয়ার। এরপর তো আর মনোবল থাকে না কাজ করার। ইচ্ছেও করে না। তো সন্দেহের কথা বলছেন কুমিল্লা কথা। ওটা খুব বড় নির্বাচন নয়। আজকাল আমি ইউটিউব দেখা বন্ধ করে দিয়েছি। যখনই আমার কোনো ছবি দেখি, বুঝতে পারি যে বাপ-দাদাসহ গালিগালাজ শুরু হবে। দেখি না তো ইউটিউব। কারণ হচ্ছে এমনভাবে বলা হচ্ছে যে মাজা ভেঙে, এটা ভেঙে গেছে। আমরা মিডিয়াকে কিন্তু সাপোর্ট দিই। মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। কিন্তু ওখানে বলা হচ্ছে কুমিল্লার ইয়েকে বের করতে পারলাম না।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি আইনের ছাত্র, আইন পড়ি, লেখালেখি করি। অনেক দিন পড়িয়েছিও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাড়াহুড়া করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো যে, এমপি বাহার সাহেব খুব ডিস্টার্ব করছেন। অনেক সময় হটকারী করে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যে এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে হবে। পড়ে যখন সমালোচনা হলো আমি আইনটা ভালোভাবে পড়ে দেখলাম কোনোভাবেই কোনো এমপিকে তার ঠিকানা থেকে, এমপি না চোর-ডাকাতকেও তার ঠিকানা থেকে বহিষ্কার করার কোনো অধিকার নির্বাচন কমিশনের নেই।
তারপর আমি দেখলাম সমালোচনা আমাদেরই হবে, সেখানে বলা হলো-একজন এমপিকে বের করে দিতে পারলেন না, মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, মাজা ভেঙে গেছে, ঘাড় ভেঙে গেছে, সবকিছু ভেঙে গেছে। তখন আমরা বললাম যে আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তখন তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হলো, আমরা তাকে অনুরোধ করেছি, এটা খুব বেআইনি অনুরোধ নয়। উনি যদি অনুরোধ রক্ষা করে চলে আসতেন অনেকে খুশি হতেন।
এবি