বাংলাদেশের বরেণ্য অভিনেত্রী আফসানা মিমি ও বহুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়ক ফেরদৌস প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন।
গত শুক্রবার সরকারি অনুদানে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘রাসেলের জন্য অপেক্ষা’র শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। সিনেমাটি নির্মাণ করছেন নূর ই আলম। এটি মূলত সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে। চিত্রনাট্য করেছেন আহমেদ ইউসুফ সাবের।
এতে একজন কর্নেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফেরদৌস, যিনি রাসেলের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন, যিনি মূলত রাসেলের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। একই সিনেমায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফসানা মিমি।
ফেরদৌস জানান, এবারই প্রথম তিনি এবং আফসানা মিমি একই সিনেমায় অভিনয় করছেন। বিষয়টি নিয়ে দুজনই বেশ আবেগাপ্লুত এবং উচ্ছ্বসিত।
সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘রাসেলের জন্য অপেক্ষা’র মূল গল্প হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলকে নিয়ে। শেখ রাসেল ছিল রাজধানীর ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। একসময় বাদাম বিক্রেতা দুলালের সঙ্গে তার খুব ভাব হয়। একদিন রাসেল হারিয়ে যায়। এই গল্প রাসেলের সাথে দুলালের নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের। এই গল্প বন্ধুর জন্য বন্ধুর অপেক্ষার।
এতে অভিনয় প্রসঙ্গে আফসানা মিমি বলেন, ‘অন্য কোনো কাজ করার আগে আমি স্ক্রিপ্টটা ভালোভাবে দেখি। কিন্তু এই সিনেমায় আমি চরিত্র দেখেই কাজ করতে আগ্রহী হয়েছি। আর এটি একটি বাচ্চাদের জন্য নির্মাণ চলতি সিনেমা এবং সরকারি অনুদানের সিনেমায় কাজ করাটা আমি মনে করি শিল্পী হিসেবে দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বঙ্গমাতার চরিত্রে কাজ করাটা আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই করেছি।’
ফেরদৌস বলেন, ‘আমি এবং মিমি এমন একটি সিনেমাতে অভিনয় করেছি যা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আমাদের দুজনের শুটিং হয়েছে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। যে বাড়ির সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস জড়িত, যে বাড়ির সঙ্গে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক, আত্মার সম্পর্ক।
সেই বাড়িতে গিয়ে শুটিং করব কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। খুব অল্প দৃশ্য, কিন্তু তার মধ্যেও এক অন্যরকম ভালো লাগা রয়েছে। এর আগে ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে গিয়েছি বহুবার, তখন একটা অন্য অনুভূতি কাজ করেছিল।
কিন্তু শুটিংয়ের সময় যখন গেলাম, তখন আমি বারবার শিউরে উঠছিলাম। আমার মনে হয় আমার শিল্পী জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে এই সিনেমাতে কাজ করার বিষয়টি। দর্শক যেহেতু আবারও হলমুখী হয়েছেন।
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই যেভাবে তিনি আমাদের চলচ্চিত্রকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন, তার জন্য। আমাদেরও সময় এসেছে দেশকে-জাতিকে সমৃদ্ধ করার, ভালো ভালো সিনেমা উপহার দেয়ার।’
ফেরদৌস জানান, তিনি এবং আফসানা মিমি দীর্ঘ অভিনয় জীবনে একসঙ্গে একটি সিনেমার জন্য ডাবিং করেছিলেন। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেস্ত’ সিনেমার নায়ক শাকিল খানের ভয়েজ দিয়েছিলেন ফেরদৌস এবং নায়িকা পপির ভয়েজ দিয়েছিলেন আফসানা মিমি।