জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে জীবন মানিয়ে নেবার ৭ টি কৌশল

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২, ০৮:১৪ পিএম
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে জীবন মানিয়ে নেবার ৭ টি কৌশল
ছবি: বিবিসি

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মাঝেই জ্বালানি তেলের মূল্য এক লাফে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি মানুষজনকে চিন্তায় ফেলেছে।

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবহন ভাড়াসহ সবকিছুর দাম আরেক দফা বেড়েছে। খরচ বাড়লেও অধিকাংশ মানুষের উপার্জন বাড়েনি।

এমন অবস্থায় সীমিত আয় দিয়ে পরিবার চালাতে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

প্রতিটি পরিবার কিংবা মানুষ যা ব্যয় করে সেটি তার জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় মনে করেই ব্যয় করে।

কারো জন্য সেটি প্রয়োজন, আবার কারো জন্য সেটি বাড়তি ব্যয় মনে হতে পারে।

তিন বেলা খেয়ে জীবনধারণ করার পাশাপাশি মানুষের জীবনে আরো অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়।

কিন্তু জিনিসপত্রের দামের উর্ধ্বগতির কারণে অনেক সময় সাময়িকভাবে কিছু বিষয় কাটছাট করতে হয়।

আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য কীভাবে বজায় রাখা যায় সেটিই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

এমন প্রেক্ষাপটে যেভাবে সমন্বয় করা যায়

বাজারের তালিকা দেখুন

প্রতি মাসে আপনার বাজারের তালিকা দিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন।

গত কয়েকমাস মাসের বাজারের তালিকা ভালো করে দেখে নিন।

এমন কোন খরচ কি করেছেন যেটি না করলেও চলতো?

যদি সে রকম কিছু থাকে তাহলে আপাতত তালিকা থেকে বাদ দিতে পারেন।

হয়তো দেখা যাবে সেখানে হয়তো আপনার কিছু টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

রেস্টুরেন্টে খাবার আগে ভাবুন

শহরাঞ্চলে অনেকে মাঝে মধ্যে হোটেল-রেস্টুরেন্টের খাবার খেতে পছন্দ করেন।

মানুষের জীবনের বৈচিত্র্যের জন্য অনেকে এটি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।

ঢাকার বাসিন্দা সামসুন নাহার বলেন, পরিবার নিয়ে প্রতিমাসে তিন থেকে চারবার রেস্টুরেন্টে খাওয়া হয়। এতে গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়।

কিন্তু এখন তিনি ঠিক করেছেন মাসে একবারের বেশি যাবেন না। এতে তার কিছুটা সাশ্রয় হবে।

আড্ডায় খরচ কমান

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে হাটে-বাজারে কিংবা বাড়ির কাছে চায়ের দোকানে বা হোটেলে আড্ডা দিয়ে সময় কাটান অনেকে।

এখানে শুধু আড্ডাই হয় না। সাথে কিছু চা-নাশতাও খাওয়া হয়।

নোয়াখালীর বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, এক কাপ চা এখন ১০ টাকা। দিনে কয়েক কাপ চা বাজারে কিংবা দোকানে গিয়ে খাওয়া হতো। সেই সাথে টুকিটাকি নাশতাও ছিল।

এখন সে অভ্যাস কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন তিনি। ফলে কিছুটা সাশ্রয় করার চেষ্টা করছেন তিনি।

যাতায়াত ভাড়া কমান

জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে যাতায়াত ভাড়ার উপর।

পেট্রোল, ডিজেল এবং অকটেন চালিত ভাড়া তো বেড়েছেই সেই সাথে রিক্সা এবং ইজিবাইকের ভাড়াও গেছে।

যাতায়াত ভাড়া বাবদ প্রতিটি পরিবারেই একটি বড় অংকের টাকা খরচ হয় প্রতিমাসে।

যাতায়াতের বাহন হিসেবে বাই সাইকেল বেছে নিলে যাতায়াত ভাড়া বাবদ বড় অংকের টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

যদিও বাই সাইকেল কিনতে হলে এককালীন কিছু টাকা খরচ করতে হবে, কিন্তু এটি দীর্ঘ মেয়াদে যাতায়াত ভাড়া সাশ্রয়ের সুযোগ করে দিতে পারে।

এছাড়া বাই সাইকেল চালানোর স্বাস্থ্যগত উপযোগিতাও আছে।

সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত

বিয়ে, জন্মদিন কিংবা নানা উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু এবং পরিচিত জনদের নিয়ে সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে অনেকেই পছন্দ করেন।

যারা সীমিত আয়ের লোকজন তাদের ক্ষেত্রে এটি বাড়তি আর্থিক চাপ বটে।

মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে এসব অনুষ্ঠান সীমিত করলে কিছুটা সাশ্রয় হতে পারে।

এসব অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য যে টাকা জমানো হয়েছে সেগুলো অন্য খাতে খরচ করা যেতে পারে।

ঘুরে বেড়ানোতে সাশ্রয় করুন

আজকাল দেশের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে অনেকেই পছন্দ করেন।

জীবনে বৈচিত্র্যের জন্য এটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন অনেকে। শহরাঞ্চলের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা শহরের বাসিন্দারাও ঘুরে বেড়াতে চান।

অনেকে হয়তো ঘন ঘন ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে ভ্রমণের চাহিদা কিছুটা কমিয়ে আনলে অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব।

বিল সাশ্রয় করুন

বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি এবং মোবাইল ফোনের বিল বাবদ একটি বড় অংকের টাকা খরচ হয় শহরাঞ্চলের বেশিরভাগ পরিবারে।

গ্রামাঞ্চলে পানির বিল না থাকলেও অন্যান্য বিল গুণতে হয়। প্রতিটি বিল থেকে কতটা সাশ্রয় করা যায় সেটা ভেবে দেখতে পারেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা

এবি