সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে চা শ্রমিকরা ১৪৫ টাকায় কাজে যোগ দিতে রাজি হয়েছে। রোববার থেকে সচল হচ্ছে ২৪০ চা বাগান। এ ব্যপারে শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে আসছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিশি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এ মজুরীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
সেখানে জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপিসহ শ্রম অধিদপ্তর, সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক ডিডি নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা একটা সমঝোতায় পৌছেছি। শ্রমিকরা ১৪৫ টাকায় কাজ যোগ দিতে রাজি হয়েছেন। চট্টগ্রামের অনেক চা বাগানে শুক্রবার থেকেই চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
চা শ্রমিকদের সাথে সরকারের সমঝোতা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে চা শ্রমিকরা ১৪৫ টাকায় কাজে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ফিরে এসে আমাদের কথা শুনবেন। উনি ১৪৫ টাকা হাজিরা নিয়ে কাজ করার জন্য বলেছেন। আমরা তো উনার কথা ফেলতে পারি না।
এর আগে বুধবার রাজধানীর বিজয়নগরস্থ শ্রম অধিদপ্তরে ত্রিপক্ষীয় সভায় চা-বাগান মালিকেরা সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা মজুরি দেওয়ার প্রস্তাব দিলে শ্রমিকেরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তাদের দাবি, চা শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ৩০০ টাকা করতে হবে। উভয় পক্ষের এমন কঠোর অবস্থানের কারণে মালিক, শ্রমিক ও সরকারের মধ্যে দুই দফায় ৬ ঘণ্টার ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তাৎক্ষনিক সারাদেশে সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আন্দোলনের দশম দিনে শনিবার (২০ আগস্ট) সমঝোতা হল।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট) শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রীমঙ্গলে এসে বিষয়টি সুরহা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩০০ টাকা মজুরীর বিষয়টি আলোচনা করতে রাজি না হওয়ায় বৈঠকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শ্রম অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঢাকায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকেন মহাপরিচালক।
বৈঠক উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সুত্রে জানা যায়, শ্রম অধিদপ্তরে শুক্রবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫ টায় এই বৈঠক শুরু হয়ে শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টায়।
শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি`র সভাপতিত্বে দুই দফায় প্রায় ৬ ঘণ্টা অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ শ্রমিকদের মজুরী ১২০ টাকার স্থলে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা করতে রাজি হন।
এর পরপরই বাংলাদেশ চা শ্রমিকনেতারা ঘোষণা দিয়েছেন দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। সভায় দুই পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বিরতি দিয়ে দুই দফা চলে বৈঠক।
বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাতটি ভ্যালির সভাপতি, সংগঠনের নির্বাহী উপদেষ্টা রামভজন কৈরী, সহসভাপতি পংকজ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, মনু ধলাই ভ্যালির সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা এবং বাংলাদেশীয় চা সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আমারসংবাদ/টিএইচ