ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সিমেন্ট ব্লকের ব্যবহার বাড়াতে হবে। ঢাকার অদূরে ইটের ভাটাগুলো আমাদের বন্ধ করতে হবে। বায়ুদূষণের ৫৬ শতাংশ হয় ইটভাটা থেকে।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘গ্রিনিং সিটিস থ্রো রিডিউসিং এয়ার অ্যান্ড প্লাস্টিক পল্যুশন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ঢাকায় তেমন খোলা জায়গা নেই। মিরপুরে একটা খোলা জায়গা ভরাট করে আমি চেয়েছিলাম ঘাস লাগিয়ে দেবো, যাতে মানুষ হাঁটতে পারে, খেলাধুলা করতে পারে। কিন্তু, বালু ভরাট করার পরই মানুষ সেখানে চলাচল শুরু করেছে।
তিনি বলেন, গুলশান, বনানী, বারিধারা লেকে আমি কোনো মাছের চাষ করতে পারছি না, দূষণের কারণে। এখানে মশার চাষ হচ্ছে। প্রত্যেকটি বাড়িতে যে পয়ঃবর্জ্য বের হচ্ছে, সেটি সরাসরি লেকে গিয়ে পড়ছে। আপনারা বাড়িতে যদি জেনারেটর লাগাতে পারেন, তাহলে কেন এডসোর্স ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট লাগাতে পারবেন না?
মেয়র আরও বলেন, আজকে মোট বায়ুদূষণের ১০ শতাংশ হচ্ছে যানবাহনের ধোঁয়া থেকে। এ বিষয়ে আমরা প্রথমে স্কুলের গার্ডিয়ানদের সঙ্গে কথা বলেছি। স্কুলের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের অতিরিক্ত স্কুল গাড়ি বন্ধ করতে হবে, পরিবর্তে স্কুল বাস ব্যবহার করতে হবে। যারা রাইড শেয়ারিং করেন, তাদের সাথেও আমার কথা হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলবাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা নেব। ঢাকা শহরকে বায়ুদূষণমুক্ত করতে হলে স্কুলবাস চালু করতে হবে।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ড্রেন ভরে যাওয়। এর বড় কারণ বড়-বড় যে বিল্ডিংগুলোর পাইলিং হচ্ছে, এগুলোর ময়লা-কাদা কোথায় যাচ্ছে? ড্রেনেই যাচ্ছে। পুরোনো বিল্ডিংগুলো যে ভাঙা হয়, সে বর্জ্য কোথায় যায়? এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। প্রত্যেকদিন ড্রেন পরিষ্কার করা আসলে সম্ভব না। আরেকটা বিষয় হলো, বিয়ের কার্ডে প্লাস্টিকের ব্যবহার করা হচ্ছে। যত বেশি টাকা, তত বেশি মোটা বিয়ের কার্ড। এটি বন্ধ করা দরকার।
আতিকুল ইসলাম বলেন, সি-৪০ সম্মেলনে গেছি আমি। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আজকে বিশ্ব ওলট-পালট হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য কি আমরা দায়ী? আমরা তো সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণ করি। এ জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ী। এ জন্য সি-৪০ সম্মেলনে বলে এসেছি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
মেয়র বলেন, পলিথিনের পরিবর্তে যে ব্যাগ আবিষ্কৃত হয়েছে, সেটির দাম অনেক বেশি। আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করব, এটির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য। আরেকটি ঘোষণা দিতে চাই, যারা ছাদ বাগান করবেন, তাদের করের ১০ শতাংশ বাট্টা দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটা নীতিমালা আমরা তৈরি করছি। আমরা ইনোভেটিভ কিছু করার চেষ্টা করছি। শহরকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বসবাসযোগ্য উপযোগী করে রেখে যেতে চাই।
এবি