সাড়ে তিন মাস পর আইন মন্ত্রণালয়ের সাড়া পেল ইসি

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ১২:৫০ এএম
সাড়ে তিন মাস পর আইন মন্ত্রণালয়ের সাড়া পেল ইসি

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান সংশোধনী চেয়ে তিন বার চিঠি পাঠিয়ে তিন মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি)। অবশেষে সাড়া দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সাড়ে তিন মাস পর নির্বাচন কমিশনের জবাবে সাড়া দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান নূর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ইসিকে জবাব দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান সংশোধনী চেয়ে তিন মাসের বেশি সময় ধরে অপেক্ষায় ছিল ইসি। কিন্তু তাতেও সাড়া দেয়নি আইন মন্ত্রণালয়। তিনবার চিঠিও দেওয়া হয়েছিল ইসির তরফ থেকে। তাতেও টনক নড়েনি। সর্বশেষ চলতি সপ্তাহেও আইন মন্ত্রণালয়ে ফের চিঠি দেয় ইসি। এই বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, তিনি এর শেষ দেখতে চান।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) খসড়া প্রস্তাবের পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার তথ্য চেয়ে পাঠানো দুটি চিঠিও উপেক্ষা করা হয়েছিল। দুইবার জবাব না পেয়ে এবার কমিশন আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে সময় বেঁধে দিয়েছিল। তবে এ মাসেই জবাব দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান আরপিওতে যেসব সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—ভোট বাতিলে ইসির ক্ষমতা ও ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো, প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান, সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে শাস্তি, দলের সর্বস্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দেওয়া, দায়িত্বে অবহেলায় কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতা বাড়ানো, প্রার্থীদের আয়কর সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংস্কার চায় বর্তমান কমিশন ৷

আসাদুজ্জামান নূর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, আরপিও-এর সংশোধনী প্রস্তাবসমূহ নীতি-নির্ধারণী বিষয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিদ্যমান আরপি-এর বিধানসমূহের সঙ্গে ওই প্রস্তাবসমূহ সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সে বিষয়সহ সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রুলস অব বিজনেস-১৯৯৬ এবং অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং দ্য ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত সংশোধনীসমূহ বিল আকারে প্রস্তুতপূর্বক নীতিগত/চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনসহ জাতীয় সংসদে উত্থাপনের নিমিত্ত যাবতীয় কার্যক্রম লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ওপর ন্যস্ত।

চিঠিতে আরও বলা হয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে সর্বদা সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন হতে আরপিও-সহ নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য যে সকল আইন, বিধি, প্রবিধি, প্রজ্ঞাপন ইত্যাদি নূতনভাবে প্রণয়ন বা সংশোধনের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে সেসকল প্রস্তাবসমূহ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে সূচারুরূপে সম্পন্ন করেছে। আরপিও-এর প্রস্তাবিত সংশোধনসমূহের ওই রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া মাত্রই বিল আকারে প্রস্তুতপূর্বক নীতিগত/চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ইএফ