আগামী বছর থেকে বিদ্যুতের সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, আগামী বছর থেকে বিদ্যুতের সংকট আর আর থাকবে না। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘নেসকো টুওয়ার্ড ২০৪১, চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কম্পানি (নেসকো)।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হবে বলে। `দেশের সেচ পাম্পগুলোকে কিভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সোলার প্যানেলে রূপান্তর করা যায় সেই বিষয়টি নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। `
বিতরণ কম্পানিগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলো নিজেরাও উৎপাদনে যেতে পারে, তবে সেটা নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে হলে ভালো হয়। নেসকোর বিতরণ এলাকায় অনেক চরাঞ্চল রয়েছে, সেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক সুযোগ রয়েছে বলেও তিনি জানান।
নসরুল হামিদ বলেন, `দেশে আগামী বছরগুলোতে মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। বিদ্যুৎ সমস্যা আর থাকবে না। সামনে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসেব এবং আদানির বিদ্যুৎও আসবে। `
প্রতিমন্ত্রী বলেন, `এখন যত্রতত্র শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে যত্রতত্র শিল্প কারখানায় সংযোগ না দেওয়ার। সে বিষয়গুলো বিতরণ কম্পানিগুলোর মাথায় রাখা দরকার। `
নেসকো চেয়ারম্যান মো. মোহসীন চৌধুরী বলেন, `নেসকো অত্যন্ত দূর্গম এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ করছে। এসব এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দেশের অন্যান্য এলাকা হতে একটু কম। বিদ্যুতের চাহিদাও কিছুটা কম। নেসকো এই এলাকায় একটি ক্যাটালিস্টের ভূমিকায় রয়েছে। নেসকোর সফলতার উপর নির্ভর করছে এ এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি প্রকৃতি। অর্থনৈতিক উন্নয়ন বয়ে আনবে আর্থ-সামাজিক গতিশীলতা। আর এভাবেই এ এলাকা হয়ে উঠবে বাংলাদেশের ক্রিটিকাল অর্থনৈতিক জোন। ক্যালিফোনিয়া ছিল আমেরিকার কৃষি ফোন; যা এখন পৃথিবীর ৫ম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এভাবেই নেসকো এলাকাও এগিয়ে যাবে – এটা আমার বিশ্বাস। `
বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, ` নেসকোর গ্রাহক ১৮ লাখ, তারমধ্যে সাড়ে ৫লাখ গ্রাহক প্রি-পেইড মিটারের আওতায় রয়েছে। ২-১ বছরের মধ্যে শতভাগ গ্রাহক প্রিপেইড মিটারের আওতায় আসবে। `
তিনি বলেন,` আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে নেসকো একটি স্মার্ট ডিস্ট্রিবিউশন গড়ে তুলতে চায়। আমি আশা করছি তারা সবার আগে সেটি করতে সক্ষম হবে। `
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, `সার্বিক দিক বিবেচনা করলে নেসকো এগিয়ে আছে। তবে তাদের সিস্টেম লস এখনো কিছুটা বেশি। তাদেরকে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। `
উল্লেখ্য, নেসকো দেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৭ টি জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ করছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেসকোর এমডি জাকিউল ইসলাম, পিডিবির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানসহ প্রমুখ।
টিএইচ