‘বেসরকারি হাসপাতালে গেলেই গর্ভবতীদের সিজার করা হয়’

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩, ০৮:০১ পিএম
‘বেসরকারি হাসপাতালে গেলেই গর্ভবতীদের সিজার করা হয়’

চিকিৎসার জন্য গর্ভবতী নারীরা বেসরকারি কোনো হাসপাতালে গেলেই তাদের সিজার করে দেয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (নিপোর্ট) আয়োজিত বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজন ছাড়া সিজার হয় না। কারণ সিজার হলে তাদের আলাদা কোনো লাভ নেই। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে সিজার হলেই অতিরিক্ত সুবিধা।

তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি আগের থেকে বেড়েছে। কিন্তু এখন কম হচ্ছে। বস্তির নারীদের ৫৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি হয়, আর বস্তির বাইরে শহরে ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানিক ডেলভারি হয়। এটা ৯০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিৎ। এই জায়গাটাই অনেক কাজ করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বাড়াতে পারলে, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমে যাবে। আমাদের আয়ুস্কালও বেড়ে যাবে। এদিকটায় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।  

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সেন্টারে ৮ ঘণ্টা কাজ হয়। এই সার্ভিসে কেউ ডেলিভারিতে আসবেনা। আট ঘণ্টা শেষে সেন্টারে তো কেউ থাকে না। এখানে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার। আমাদের সারাদেশে চার হাজার সেন্টার রয়েছে। এগুলোতে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস চালু করতে পারলে, আমরা কাঙ্ক্ষিত এমডিজির লক্ষে পৌঁছাতে পারবো।  

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সিজার রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার মাত্রা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। সরকারি হাসপাতালে ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি সিজার হয় না। তাহলে এত বেশি সিজার কেনো হয়। এটার কারণ প্রাইভেট হাসপাতালে গেলে বেশির ভাগই সিজার করা হয়। সেখানে আর্থিক বিষয় জড়িত রয়েছে। আমাদেরকে এই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।  

স্বাস্থ্যখাতে সফলতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমরা টিকায় সফল হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাকসিন হিরো উপাধি পেয়েছেন। আটটি বিভাগে আটটি নতুন হাসপাতালের কাজ শুরু করেছি। এটাই আমাদের শেষ বছর। যেসব কাজ চলমান আছে, এগুলো সম্পন্ন করতে চাই।  

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দক্ষ জনবলের অভাব। এছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় জনবল অনেক কম। প্রতি ১০ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের মাত্র ২৩/২৪ জন লোকবল আছে, যেখানে অন্যান্য দেশে আছে ৮০/৯০ জন।  

এসময় বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ শাহাদত হোসেন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক একে এম নুর উন নবী।  

নিপোর্ট মহাপরিচালক এবং অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহান আরা বানু এনিডিসি, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির প্রমুখ।

কেএস