প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার রাজশাহীতে দিনব্যাপী সফরে প্রায় ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ২৫টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী আনুমানিক ৩৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
সরকারি সূত্র জানায়, বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। রাজশাহী সিটি করপোরেশন প্রায় ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর সিঅ্যান্ডবি ক্রসিংয়ে ম্যুরালটি নির্মাণ করেছে।
এছাড়া, সিটি করপোরেশন আরও যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সেগুলো হলো-শেখ রাসেল শিশু পার্ক, মোহনপুর রেল ক্রসিংয়ের ওপর ফ্লাইওভার, ৪ লেনের সড়ক এবং ভাদ্রা রেলক্রসিং থেকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য একটি পৃথক লেনসহ রোড ডিভাইডার, ৪ লেনের সড়ক এবং রোড ডিভাইডার।
বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে সিটিরহাট পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন এবং সড়ক প্রশস্তকরণ, কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী ক্রসিং এবং কার্পেটিং সড়কের উন্নয়ন, হাইটেক পার্ক হয়ে রেন্টুর খারির আড়ত থেকে ধলুর মোড় পর্যন্ত নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ এবং কার্পেটিং। কোর্ট থেকে শাহারতলী ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ।
রাজশাহী নগরীর সিঅ্যান্ডবি ক্রসিং সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে।
আরসিসি `রাজশাহী সিটিতে সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক` ২ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকার প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রায় ৫ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের বৃহত্তম ম্যুরাল নির্মাণ করেছে।
ম্যুরালটির উচ্চতা ৫৮ ফুট এবং ম্যুরালের মূল অংশে ৫০ ফুট উচ্চতা এবং ৪০ ফুট চওড়া বঙ্গবন্ধুর ছবি রয়েছে। সীমানা প্রাচীরের উভয় পাশে ৭০০ ফুট জায়গায় টেরাকোটার কাজ করা হয়েছিল। গ্যালারি এবং ল্যান্ডস্কেপিং সুপার গ্রানাইট দিয়ে সুসজ্জিত। ম্যুরালে নাইট ভিশনসহ সুসজ্জিত বৈদ্যুতিক বাতি রয়েছে।
রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, `ম্যুরালটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ তার জীবন, কর্ম এবং দেশের স্বাধীনতায় প্রশংসনীয় অবদান ও ত্যাগ সম্পর্কে জানতে অনুপ্রাণিত করে।`
মানুষের বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষে রাজশাহী নগরীতে শেখ রাসেল শিশু পার্কের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। আরসিসির উদ্যোগে ছোট বনগ্রাম এলাকায় ২ দশমিক ১৪ একর জমির ওপর পার্কটি নির্মাণ করা হয়, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রায় ১১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পুঠিয়া থেকে বাগমারা পর্যন্ত একটি মহাসড়ক নির্মাণ করেছে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) প্রায় ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধান কার্যালয়ের ষষ্ঠ তলা থেকে দশম তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করেছে। প্রায় ২০ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদরদপ্তর ভবন নির্মাণ করেছে।
লক্ষ্মীপুর এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। মোহনপুর উপজেলায় ২২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রায় ২২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় রাজশাহী শিশু হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহীতে একটি বহুতল সমাজসেবা ভবন নির্মিত হয়েছে। রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে প্রায় ৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ তলার ওপর ২ তলা বিশিষ্ট মহিলা হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
চারঘাট উপজেলায় ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী সিভিল সার্জনের অফিস নির্মাণ করা হয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার ভাঙন থেকে বাম তীর রক্ষায় ৬৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি সড়ক নির্মাণ করছে।
রাজশাহী পিটিআইতে প্রায় ৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীতে প্রায় ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন।
অন্যদিকে, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রকল্পগুলো হলো- ২৪ কোটি টাকায় তথ্য কমপ্লেক্স ভবন, ৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় আঞ্চলিক জন প্রশাসন অফিস ভবন, ৬২ কোটি টাকায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান বালক উচ্চ বিদ্যালয়। ১৬২ কোটি টাকায় বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ।টিএইচ