নিরাপত্তা শঙ্কার অজুহাতে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ চলতি সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। এর প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) অন্তত নয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে তুরস্ক।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে নিজ নিজ নাগরিকদের ইস্তাম্বুলে ভিড়ের মধ্যে না যেতে এবং পর্যটন স্পটগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে সতর্কতা জারি করেছে।
অন্তত সাতটি ইউরোপীয় দেশ ইস্তাম্বুলে তাদের কনস্যুলেট বন্ধ করে দিয়েছে। তবে মার্কিন কনস্যুলেট খোলা রয়েছে। কারণ ভবনটি ইস্তাম্বুল শহরের কেন্দ্রে নয়। তাই এলাকাটিকে কম ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটো সদস্য হওয়ার প্রস্তাবে আঙ্কারা ভেটো দেওয়ার পর থেকেই তুরস্ক ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। ডেনমার্ক, সুইডেন ও নেদারল্যান্ডসে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে উগ্র ডানপন্থিরা মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের কপি পোড়ানোর পর সম্পর্কের আরও অবনতি হয়।
পশ্চিমা দেশগুলোর নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে ক্রমবর্ধমান হতাশার কথা গোপন করেনি তুরস্ক। প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে গত সপ্তাহান্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে আঙ্কারা।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কনস্যুলেট বন্ধের বিষয়ে আলোচনার জন্য নয়টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল।
ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, জার্মানি, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের তলব করা হয়েছিল।
তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু অভিযোগ করেছেন, আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠেয় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচনের প্রচারণায় হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা হিসেবে কনস্যুলেট বন্ধ করেছে পশ্চিমারা। তিনি বলেন, পশ্চিমারা তুরস্কের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাচ্ছে। তারা তুরস্ককে অস্থিতিশীল করতে চায়।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের দলের মুখপাত্র পশ্চিমাদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন বিবৃতি’ দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। ওমের সেলিক টুইটারে বলেছেন, কিছু দূতাবাস এবং কনস্যুলেট আমাদের দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াতে বিবৃতি দিচ্ছে। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।