বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতিতে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনী মোতায়েন করলে সেটি ফলপ্রসূ হবে না বলে মনে করেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি অডিটোরিয়ামে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভোক্তাদের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি ও দু-একজন ব্যবসায়ী রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথ বাহিনীকে যুক্ত করার প্রস্তাব দিলে তিনি এ কথা বলেন।
রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ঢাকা জেলা ও ঢাকা সিটির অধীন সব বাজারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের অংশগ্রহণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় বাজারে যৌথ বাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছিল। সেই সময় অন্তত বড় ২৫টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিল পণ্যবাজারে। কিন্তু যৌথ বাহিনীর বাজারে নিয়ন্ত্রণ করার কারণে ২৫টি বড় প্রতিষ্ঠান থেকে কমে এখন পাঁচটিতে নেমেছে। এখন আবার যৌথ বাহিনী নামালে এই পাঁচটিও হয়তো হারিয়ে যেতে পারে।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, এবার রমজানে যে এলাকার বাজারে দ্রব্যমূল্যে অস্থিতিশীলতা দেখা যাবে, সেই বাজারের কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সফিকুজ্জামান বলেন, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সরবরাহকারীরা বাজারে পণ্য কম দিচ্ছে। কিন্তু আমদানি ও বাজারজাতকারীদের মিল থেকে প্রতিদিন কী পরিমাণ পণ্য বাজারে সরবরাহ করা হয় সেই তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসে। সেই তথ্য অনুসারে বাজারের পণ্যের ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এরপরও বাজারে কেন অস্থিরতা তৈরি হয় তা বুঝে আসছে না।
আমদানিকারকদের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এরপরও কোনো বাজারে যদি অস্থিরতা তৈরি হয়, তাহলে সেই বাজার কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই, ব্যবস্থাপনার ঘাটতি আছে। আমাদের ওপর চাপ আছে, বলা হচ্ছে আমরা রিফাইনারি বা মিল পর্যায়ে অভিযানে যাচ্ছি না। সরকার নির্ধারিত দামের যদি ব্যত্যয় হয় তাহলে এবার সেই পর্যায়ে যাবে ভোক্তা অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান প্রমুখ।