রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়া ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের টাকা বহরকারী মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের গাড়িসহ সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৯ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার হোটেল লা মেরিডিয়ানের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
চারটি বক্সের মধ্যে তিনটি বক্স উদ্ধার করেছে ডিবি। এ সময় মানি প্লান্ট লিংকের দুই পরিচালক ও গাড়িচালকসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। ডিবি পুলিশ বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। ছিনতাইকারীরা অনেক আগে থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল।
হারুন অর রশীদ বলেন, সকালে গাড়িটি মিরপুর-১২ নম্বর থেকে রওনা দেয়। উত্তরায় যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীরা গাড়িটি গতিরোধ করে। টাকা নিয়ে যাওয়া গাড়িতে ছয়জন লোক ছিল। ছিনতাইকারীরা ছয়জনকে মারপিট করে টাকার চারটি বক্স নিয়ে গাড়িতে পালিয়ে যায়। চারটি বক্সে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিল।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় তুরাগ থানা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের টিম। এরপর ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় টহল, থানা এবং ডিবি পুলিশ টাকা উদ্ধার ও ছিনতাইকারীদের ধরতে কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে উত্তরা এলাকা থেকে পালানোর সময় তিনটি বক্সসহ সাতজনকে আটক করা হয়।
টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, সিকিউরিটিজ কোম্পানি মানি প্লান্ট লিংক কর্তৃক টাকা আনা-নেওয়ার বিষয়টি ছিনতাইকারীরা অনেক দিন ধরে ফলো করছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ছিনতাইকারীদের হাতে ছিল না কোনো অস্ত্র।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। মানি প্লান্ট লিংকের দুজন পরিচালসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
এর আগে তুরাগ থানায় এক প্রশ্নের জবাবে উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম বলেন, এতগুলো টাকা এদিক দিয়ে যাবে ছিনতাইকারীরা তা জানবে কী করে? নিশ্চয়ই পূর্ব পরিকল্পনা ছিল। কারণ দিনের বেলায় ঢাকায় ছিনতাই ও ডাকাতির এতো বড় ঘটনা ঘটার মতো পরিস্থিতি নেই। যা ঘটে ছোটখাট, মধ্যরাতে ঘটে। সকালে এ ধরনের ছিনতাই নিশ্চয়ই পূর্বপরিকল্পিত আমরা ঘটনাটি বিস্তারিত তদন্ত করে দেখবো। প্রতিষ্ঠানটির কোনো সদস্য এ ঘটনায় জড়িত কি না সেটাও আমরা খতিয়ে দেখবো। আমরা সব কিছু বিবেচনায় তদন্ত করছি।
ডিসি আরও বলেন, যেসব কোম্পানি এরকম টাকা স্থানান্তর করেন, বিভিন্ন ব্যাংকের টাকা বুথে স্থানান্তর করেন, তাদের আরও সতর্ক হওয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। কেউ টাকা স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে বা ট্রিপল নাইনে ফোন করে সহায়তা চাইলে আমরা দিয়ে থাকি।
এআরএস