সুদানের রাজধানী খার্তুমে তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে। সংঘাতের মধ্যেই সুদান ছাড়ছেন বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। দেশটিতে আটকে পড়া ৬৭৫ বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে ১৩৫ জন জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। বেশ কয়েকদিন পোর্ট সুদানে অপেক্ষা করে জাহাজ না পাওয়ায় তাদের ফ্লাইটে করে জেদ্দায় নেওয়া হচ্ছে। তবে অন্যদের কীভাবে জেদ্দায় নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
রোববার (৭ মে) সকালে ১৩৫ বাংলাদেশি সুদান থেকে জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও জাহাজের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় তারা জেদ্দায় পৌঁছাতে পারছিলেন না।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, সুদানে আটকে পড়া ৬৭৫ বাংলাদেশি নাগরিক ৩ মে পোর্ট সুদান পৌঁছান। তবে পোর্ট সুদানে পৌঁছানোর পর দেখা যায়, অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট নেই। সেক্ষেত্রে তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করতে হচ্ছে। এছাড়া জেদ্দায় যাওয়ার জন্য জাহাজের শিডিউল পেতেও বেগ পেতে হচ্ছে।
পোর্ট সুদান থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি আনিসুর রহমান শুক্রবার গণমাধ্যমকে জানান, গত দুই দিন ধরে পরিবার পরিজনসহ এখানে অপেক্ষা করছি। কখন জেদ্দার জাহাজে উঠতে পারবো, সেটা কেউ বলতে পারছেন না। আমরা এখানে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছি।
গত ১৫ এপ্রিল সুদানে সংঘাত শুরু হয়। এরপর ২ মে দুপক্ষ সাতদিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেও সংঘাত বন্ধ হয়নি। বৃহস্পতিবার খার্তুমের বিভিন্ন স্থানে তীব্র বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষের সম্মতি মিললেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ এবং সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরের আশপাশের এলাকা থেকে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) সরানোর চেষ্টা করছে দেশটির সেনাবাহিনী। আরএসএফকে দুর্বল করতে খার্তুমে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমের দারফুর অঞ্চলেও। সংঘাত থেকে বাঁচতে অন্তত এক লাখ লোক সুদান ছেড়ে পালিয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্তে রোজ ভিড় করছেন অসংখ্য শরণার্থী। দেশটির ভেতর বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও তিন লক্ষাধিক বাসিন্দা। দ্রুত এ সংঘাতের সমাপ্তি না হলে ‘সর্বাত্মক বিপর্যয়’ নেমে আসবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
সুদানে প্রায় এক হাজার ৫০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আটকে পড়া ৬৭৫ জন বাংলাদেশিকে গত ৩ মে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে আনা হয়। এখন পোর্ট সুদান থেকে তাদের জেদ্দায় ফিরিয়ে আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে এসব বাংলাদেশিদের ঢাকায় আনা হবে।
জেদ্দার দুইটি বাংলাদেশ স্কুলে সুদান প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ওষুধ এবং সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরএস