বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন,` বর্তমান বাজেট মূলত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বাজেট। ২০০৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। যেমন কৃষির আকার বেড়েছে ৪ গুন, রপ্তানি বেড়েছে ৫ গুন, রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬ গুণ।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হয়েছে। কভিডের মত কঠিন পরিস্থিতিতে ও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১৯৭১ এ যা ছিল তা থেকে প্রায় ৩০ গুণ বেড়ে হয়েছে। বর্তমান সরকারের সফল বাজেটের ফলে দারিদ্র্যতা এবং অতি দারিদ্রতা কমে হয়েছে ১৮.৫ এবং ৫.৬ শতাংশ।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত `সমৃদ্ধ ও সুষম বাংলাদেশ নির্মাণ: বাজেট ২০২৩-২০২৪` শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণাভিত্তিক সংগঠন `এডুকেশন, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)` এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় অনেক বেশি জোর দেওয়া হয়েছে যা মূলত সরকারের উৎসাহের ফলেই হয়েছে। তার মতে এই বাজেট কোনোভাবেই উচ্চাভিলাষী নয় বরং ভবিষ্যৎমুখী। বর্তমান মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এই বাজেট অনেক বেশি ভুমিকা রাখবে।
সরকারের সাথে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে তিনি বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষের সহায়তা কামনা কামনা করেছেন। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে এই বাজেট স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবি`র সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইআরডিএফবি এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, `বর্তমান বাজেট শিক্ষা, গবেষণা এবং উন্নয়ন এই ৩ টি জিনিসের সমন্বয় ঘটিয়ে স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ বিনির্মানে সহায়ক হবে।
বাজেটে কৃষি খাতে অনেক বেশি জোর দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ করছে যে উক্ত বাজেট স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে স্মার্ট এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বাজেট ঘোষণা করলেই হবে না। বরং বাজেটের যথাযথ ব্যবহার আমাদের করতে হবে। বাংলাদেশের সকল সেক্টরে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর জোর দিয়ে বর্তমান বাজেট মূলত স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ বিনির্মানে অনেক গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন,` মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান বাজেট নিঃসন্দেহে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে ভূমিকা রাখবে। শেখ হাসিনার যোগ্য সন্তান জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় এর মেধার গুণে কাগজহীন স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমান বাজেটে লাইট ইন্জিনিয়ারিং, এসএমই সহ সকল সেক্টরে গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক গতি আনতে সহায়ক হবে। তিনি বলেছেন বর্তমান বাজেটের যে ছোট কিছু জায়গা গুলোতে পরিবর্তন আনলে তা আরো বেশি যুক্তিযুক্ত হবে তাতে সরকারকে পুনর্বিবেচনার জন্য আহবান জানাই।
এছাড়াও তিনি বলেছেন স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ বিনির্মানে তরুণ সমাজকে কাজে লাগাতে হবে বলে বিশ্বাস করেন। সর্বপরি বাজেটের ইতিবাচক দিক গুলোর আলোচনা করে এই বাজেটকে সাদুবাদ জানিয়েছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন,` দীর্ঘ ৯ মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে অর্জিত এই সোনার বাংলায় বর্তমান সরকারের ঘোষিত বাজেট বাংলাদেশের ময়লা এবং ছেড়া লুঙ্গি পড়া প্রান্তিক মানুষগুলোর কথা চিন্তা করা হয়েছে। এই বাজেট নিঃসন্দেহে তাদের কল্যাণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে ভূমিকা রাখবে।
বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশের সংকটে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমন আপদকালীন সময়েও এমন জনকল্যাণমুখী বাজেট নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। শেখা হাসিনা বাংলার মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন দিয়ে তার সংগ্রাম শুরু করে। আজ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে এগিয়ে চলছে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে। এই বাজেট স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ গঠনে অপরিসীম ভূমিকা পালন করবে।
এইচআর