সারা দেশের ন্যায় শেরপুরের নকলায় বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণভাবে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষ হলেও বাকী পরীক্ষা দেওয়া ও ফলাফল বিপর্যয়ের শঙ্কায় পড়েছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া ৪ পরীক্ষার্থী।
সড়ক দুর্ঘটনা কবলিত আশাহত পরীক্ষার্থীরা হলো-উপজেলার সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের বানিজ্য শাখার মীর সাব্বীর ও শুভ মিয়া এবং মানবিক শাখার রুবেল মিয়া ও মানিক মিয়া। এদের মধ্যে মীর সাব্বীরের অবস্থা গুরুতর।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী উপজেলা নালিতাবাড়ীতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনা কবলিত হয় তারা। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষার আসনে বসলেও তাদের পরীক্ষা আশানুরূপ হয়নি। মীর সাব্বীরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সে বাকী পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে মহাচিন্তায় আছে। তাছাড়া আহত বাকিরা পড়েছে তাদের ফলাফল বিপর্যয়ের শঙ্কায়।
অভিভাবকরা জানান, নিজ উপজেলা শহরে পরীক্ষা নেওয়ার মতো যথেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও অজ্ঞাত কারণে হঠাৎ করেই ২০১৫ সাল থেকে হাজী জালমামুদ কলেজের পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজ কেন্দ্রের বদলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের নালিতাবাড়ী উপজেলার শহীদ নাজমুল স্মৃতি কলেজে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।
এতে করে প্রতি বছর পরীক্ষা চলাকালে কোন না কোন দিন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে গ্রামের দরিদ্র অভিভাবকদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা, নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়, মানসিক চাপে থাকতে হচ্ছে কোমলমতী পরীক্ষার্থীদের।
এসব বিবেচনায় নিজ উপজেলার চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজ কেন্দ্র পুনরায় বহালের দাবি উঠেছে। এমতাবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক অগণিত ব্যবহারকারী নিজ নিজ টাইম লাইনে নিজ উপজেলার কেন্দ্র পুনর্বহালের দাবী জানানোর পাশাপাশি অজ্ঞাত কারনে কেন্দ্র পরিবর্তনের উপযুক্ত কারণ জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এবিষয়ে হাজী জালমামুদ কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ লূৎফর রহমান জানান, কোন এক সময় সরকারের নির্দেশ মোতাবেক (কলেজ ইন্টার চেন্স) হাজী জালমামুদ কলেজের পরীক্ষার্থীরা চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজে এবং চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজের পরীক্ষার্থীরা হাজী জালমামুদ কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতো।
তবে তখনকার পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাহিদা অনুযায়ী এবং পরিবেশগত কারনে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছিলো। এখন উপযুক্ত পরিবেশ সৃস্টি হওয়ায় নিজ উপজেলার কেন্দ্র পুনরায় বহাল করা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
চন্দ্রকোনা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাগবে প্রয়োজনে সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের পরীক্ষার্থীদের চন্দ্রকোনা কলেজে এবং চন্দ্রকোনা কলেজের পরীক্ষার্থীদের জন্য সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজকে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিন দুর্ঘটনার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি নকলাতে নতুন এসেছি। আমি আসার আগেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রে কেন্দ্র সিলেকশন হয়ে গেছে। তাছাড়া বিষয়টি আমার আগে জানাও ছিলোনা।
এবছর যেহেতু পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে, সেহেতু এ মুহুর্তে কেন্দ্র পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। তবে আগামী বছর থেকে যেন পরীক্ষার্থীরা নিজ উপজেলার কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিতে পারে এজন্য কয়েকদিনের মধ্যেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
এইচআর