বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৩ দিনের অবরোধে দ্বিতীয় দিন বুধবারও রাজধানী ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার বাস। যদিও বাস মালিক সমিতি পরিবহণ চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছিল।
তবে মঙ্গলবার ও বুধবার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, আসাদগেট, শ্যামলী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের বেশিরভাগ কাউন্টারই বন্ধ ছিল। কেউ কেউ খুললেও দেখা মেলেনি যাত্রীর।
পরিবহণের কর্মকর্তারা জানান, অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই রাতের ট্রিপের জন্য টিকিট বিক্রি করছেন, কিন্তু কোনো যাত্রী পাচ্ছেন না। গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের বাইরে এন আর পরিবহণের কাউন্টার ম্যানেজার জয় বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একজন যাত্রীও পাওয়া যায়নি। যেখানে রাজধানী থেকে প্রতিদিন অন্তত অর্ধশত বাস উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যদি বিকেলের মধ্যে কোনো যাত্রী না পাওয়া যায় তাহলে কাউন্টার বন্ধ করে দেব।’
একই অবস্থা হানিফ, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন ও শ্যামলীসহ অন্যান্য দূরপাল্লার পরিবহণের। কল্যাণপুর সৌদিয়া পরিবহণের কর্মী তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য দেখিয়ে বলেন, ৩০ অক্টোবর প্রায় শতাধিক বাস রাজধানী ছেড়েছে কিন্তু (মঙ্গলবার) একটি গাড়িও ছেড়ে যায়নি। মূলত যাত্রী নেই, তাই বাস চলছে না।’
রয়েল কোচ সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের বাস খুবই ব্যয়বহুল, তাই যাত্রী পাওয়া গেলেও ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাবে না। যদিও রাজধানীতে অনেকটা নির্বিঘ্নেই সব ধরনের গণপরিবহণ চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে ঢাকার বাইরে হাইওয়েতে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে তাই বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি।’
এদিকে রাজধানীর গণপরিবহণগুলোতেও ছিল যাত্রী সংকট। মিরপুর, শ্যামলী, ধানমন্ডি, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট রুটে প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাসের যানজট থাকলেও এদিন ছিল অনেকটাই ফাঁকা। যাত্রী না থাকায় বাসের সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছেন মালিকরা। মেট্রো পরিবহণের বাস চালক ইউনুস বলেন, ‘প্রতিদিন অন্তত ১২ থেকে ১৫টা গাড়ি একসঙ্গে চলে। কিন্তু যাত্রী না থাকায় আজ মাত্র ৩টা গাড়ি চলছে। আর সড়কে গাড়ি না থাকায় এক ঘণ্টারও কম সময়ে আজিমপুর থেকে মিরপুর যাওয়া যাচ্ছে।’
প্রজাপতি পরিবহণের চালকরা জানান, আজকে তাদের ৪ ভাগের ১ ভাগ বাস রাস্তায় নামানো হয়েছে। মূলত যাত্রী নেই তাই বাসও কম। এ সময় কথা হয় আজিমপুরগামী যাত্রী মো. হীরার সাথে। তিনি বলেন, পারিবারিক জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় বের হয়েছি। আরেক যাত্রী বলেন, অফিস খোলা তাই বাধ্য হয়ে বের হয়েছি। তবে ভিড় না থাকায় খুব সহজেই বাসে উঠতে পেরেছি।’
যাত্রীরা বলেন আতঙ্ক থাকলেও জীবিকার তাগিদে তাদের বের হতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবরোধের কারণে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সীমিত কর্মী দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহণ নেই সেসব কর্মীদের ভোগান্তি বেড়েছে।
এইচআর