এটিএন নিউজ জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক নিয়ে নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে আসছে। এবার কৃষিখাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নেয় এটিএন নিউজ।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে গত ৪ ডিসেম্বর ‘এগ্রি এন্ড ফার্মিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ অনুষ্ঠানে ১৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
জমকালো এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন এটিএন নিউজ ও এটিএন বাংলা লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ এগ্রি টেক ক্যাটাগরিতে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা ও প্রতিভা সম্পন্ন প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শাহ কামাল খান।
ড. মো. শাহ কামাল খান ছোটবেলা থেকেই অসাধারণ মেধা ও সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি প্রথম বিভাগ/শ্রেণি প্রাপ্ত হন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ হতে বিএসসিএজি-তে প্রথম শ্রেণিতে উত্তির্ণ হন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম.এস ইন এগ্রোনমি-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। পিএইচডিতে ‘ধানের জেনেটিক ম্যাপিং’র উপর গবেষণা করে সফলকাম এবং প্রসংশনীয় হন। তাঁর পিএইচডি থিসিস ও প্রকাশনা ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমাদৃত হয়। তাঁর আন্তর্জাতিক সুনামধন্য জার্নালে ১০টি সহ মোট ১৮টি গবেষণা প্রকাশনা (Research Publication) রয়েছে।
তাঁর পেশাগত জীবন শুরু হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ-তে ‘Survey and evaluation of pulse seed quality status and predicting field establishment through laboratory techniques’ প্রকল্পে ‘বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা” হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে। মানসম্পন্ন ডাল বীজ নির্বাচন করার ল্যাবরেটরি পদ্ধতি উদ্ভাবন করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল প্রশংসনীয়। ন্যাশনাল সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (NST) ফেলোশিপের আওতায় তিনি ‘Effect of different levels of nitrogen on growth, yield and quality of wheat’ শীর্ষক গবেষণা করেন।
তাঁর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ফলাফল দেশের গমের ফলন ও গুণাবলী উন্নয়নে চমৎকার ভূমিকা পালন করে। পরবর্তিতে তিনি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (BRRI)-এর জেনেটিকস এন্ড প্লান্ট ব্রিডিং ডিভিশনে ‘বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা’ হিসেবে যোগদান করেন।
তৎকালীন আধুনিক ও সময়োপযোগী হাইব্রিড রাইচের উপর গবেষণার গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (BADC)-তে সহকারি পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকেন। বিএডিসিতে দীর্ঘ তিন বছর কর্মরত থেকে মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ ও সম্প্রসারণে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন।
অবশেষে ২০তম বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারে ২০০১ সালের ৩১ মে তারিখে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগদান করেন।
ডিএইতে দীর্ঘ কর্মকালীন আধুনিক লাগসই কৃষি প্রযুক্তি ও জাত সম্প্রসারণে এবং কৃষি উপকরণ যেমন: বীজ, সার ও বালাইনাশক পরিদর্শনের মাধ্যমে মূল্য ও মান নিয়ন্ত্রনে তাঁর অসাধারণ প্রতিভা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া দেশব্যাপি ছুটে বেড়িয়েছেন, কৃষকের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন আর সেজন্যই কৃষক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন।
তিনি ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান (DANIDA)-এর আইএফএমসি প্রকল্পে ড্যানিডা প্রতিনিধি হিসেবে ‘রিজিওনাল টেকনিক্যাল কোওর্ডিনেটর (আরটিসি)’ হিসেবে লিয়েনে/ফরেন সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন। কৃষক পর্যায়ে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে তাঁর বহুমুখী পদক্ষেপ ও কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
তিনি লিয়েনে/ফরেন সার্ভিসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (EU)-এর অর্থায়নকৃত এসএনভি-নেদারল্যান্ডস্ ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রকল্পে “হর্টিকালচারাল এক্সপার্ট/এডভাইজার” হিসেবে কর্মরত থেকে দক্ষতা ও মেধার স্বাক্ষর রাখেন এবং তার স্বীকৃতি স্বরুপ “বিশেষ এ্যাওয়ার্ড” প্রাপ্ত হন।
তিনি রাজশাহী ও নাটোর জেলায় ৩৩৪ টি নিরাপদ আম/টমেটো উৎপাদন কৃষক দল গঠন করেন। দলভুক্ত ৫০১৮ জন কৃষক ও ১০০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও)-দের উত্তম কৃষি চর্চা (Good Agricultural Practices-GAP), উত্তম হ্যান্ডেলিং চর্চা (Good Handling Practices-GHP), ট্রেসেবিলিটি (traceability), বালাইনাশকের নিরাপদ ও বিচক্ষণ ব্যবহার (safe & judicious use of pesticide), গ্রুপ এ্যাপরোচ (group approach), মার্কেট লিংকেজ (market linkage) প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হয়।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ১০টি কৃষক দল এ্যাক্রিডেটেড আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘ব্যুরো ভেরিটাস’ কর্তৃক প্রদত্ব ফুড সেফটি সার্টিফিকেট অর্জন করে এবং এক্ষেত্রে তাঁর ভুমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। একই প্রকল্পের আওতায় তিনটি ফুড প্রসেসিং কোম্পানীকে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা এবং তাদের Good Manufacturing Practices (GMP) সার্টিফিকেট অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকায় লেবু জাতীয় ফসলের উন্নয়ন প্রকল্পে ‘সিনিয়র মনিটরিং এন্ড ইভ্যালুয়েশন অফিসার’ হিসেবে কর্মরত থেকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রদর্শনী স্থাপন, মাঠ দিবস, প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার মাধ্যমে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণে অসামান্য অবদান রাখেন।
পরবর্তিতে তিনি জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুরে “উপপরিচালক” হিসেবে কর্মরত থেকে সুনাম কুড়িয়েছেন। নাটা’য় কর্মরত থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার দক্ষ জনবল তৈরী; নাটা’র অরগানোগ্রাম তৈরী; বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সেমিনার, কনফারেন্স প্রভৃতির দক্ষ ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন; কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে সমন্বয়সাধন; বিভিন্ন কোর্স কারিক্যুলাম ও মডিউল তৈরী, পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন এবং নাটা’র অরগানোগ্রাম তৈরীতে ড. কামালের ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার।
বিগত ১২ আগষ্ট ২০২০ বিশ্ব ব্যাংক-এর অর্থায়নকৃত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক সারাদেশব্যাপি বাস্তবায়নাধীন কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প’র প্রকল্প পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, স্মার্ট এবং যুগোপযোগী এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের কৃষি উৎপাদন টেকসই করার লক্ষ্যে ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে কৃষকের কাছে কৃষি আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এবং আবহাওয়া ও জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবসমূহের সাথে কৃষকের খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
কৃষিক্ষেত্রে আবহাওয়া সংক্রান্ত ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য কৃষি আবহাওয়া এবং নদ নদীর সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কিত তথ্যাদি কৃষকের উপযোগী ভাষায় বিভিন্ন সম্প্রসারণ পদ্ধতির মাধ্যমে সময়মত কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য ও কৃষি আবহাওয়া পরামর্শ কাজে লাগিয়ে কৃষকগণ প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলার পাশাপাশি অনুকূল আবহাওয়ায় করণীয় বিষয়ক তথ্যসমূহ সদ্ব্যবহার করে মাঠের ফসল রক্ষা, অর্থের সাশ্রয় ও উৎপাদন বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন করে কৃষিতে আধুনিক পূর্বাভাসের মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নে অসাধারণ অবদান রেখে চলেছেন চৌকস ও মেধাবী এই কর্মকর্তা। একজন অসাধারণ প্রতিভাবান, প্রগতিশিল ও সৃজনশীল কর্মকর্তা হিসেবে কৃষি আবহাওয়া পরামর্শ তৈরীতে অটোমেশন, সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্ট চালু, অটোমেটিক ওয়েদার স্টেশন স্থাপন প্রভৃতিতে কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) ব্যবহার করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট কৃষির অগ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তিনি।
প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শাহ কামাল খান-এর আন্তরিক ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের কৃষিতে পানি ও জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে ইন্টিগ্রেটেড রাইস অ্যাডভাইজরি সিস্টেম (আইআরএএস) শীর্ষক একটি মডেল বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় তৈরি মডেলটি কাজে লাগিয়ে জমি ও ফসলে পানির চাহিদা এবং ব্যবহারের মাত্রা নির্ধারণ করতে পারবেন কৃষক। মডেলটি তৈরি হয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (NASA) নাসা’র স্যাটেলাইটে ধারণ করা সেচ মানচিত্র ব্যবহার করে যা দেশের কৃষিতে নিয়ে এসেছে এক অসাধারন মাত্রা। ড. মোঃ শাহ কামাল খান নাসা’র আমন্ত্রণে সেখানে গমন করেন, ফলপ্রসু মিটিং করেন, সুস্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিশ্ববিখ্যাত নাসা’র আধুনিক প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিতে ব্যবহার করার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা সত্যিই প্রসংশনীয় ও গর্বের।
সরকারের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) এর অংশ হিসেবে তিনি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যেমন: National Aeronautics and Space Administration (NASA), University of Washington (UW), Winrock International, The Regional Integrated Multi-Hazard Early Warning System (RIMES), Asian Disaster Preparedness Center (ADPC), Practical Action (pA), Food and Agriculture Organization (FAO), Action Against Hunger (ACF), Friendship, Sher-E-Kashmir University of Agricultural Science and Technology (SKUAST) প্রভৃতির সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং কাজের পরিধি ও গতিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন বহুগুন।
এছাড়াও তিনি ভিজিটিং টিচার হিসেবে সুনামধন্য ইউনিভার্সিটি অফ দ্য পান্জাবে এগ্রোনমি ও কৃষি সম্প্রসারণ বিষয়ে মহান শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন। বহুমাত্রিক প্রতিভা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই কর্মকর্তার কৃষির শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ তিন ক্ষেত্রেই রয়েছে অবাধ বিচরণ এবং প্রশংসনীয় অবদান। তিনি শিক্ষা ও কর্মজীবনে ন্যাশনাল সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (NST) ফেলোশিপ, ড্যানিডা (DANIDA) ফেলোশিপ, নেদারল্যান্ডস্ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম (NFP), ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন (UW) ফেলোশিপ এবং প্রধানমন্ত্রী (PM) ফেলোশিপ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন। বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বরেণ্য এই কৃষিবিদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। নাটোরের সিংড়া উপজেলার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য তাকে সন্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়। দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে "বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী সন্মাননা পুরস্কার-২০২১", “স্বাধীনতা সংসদ শাইনিং পার্সোনালিটি এ্যাওয়ার্ড-২০২১” এবং “মুজিববর্ষ সন্মাননা স্মারক-২০২২” এ ভূষিত করা হয়। তিনি কর্মকালীন সময়ে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে উচ্চশিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপের সুবাদে আমেরিকা, ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস্, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কাতার, দুবাই, ভারত ও পাকিস্তান ভ্রমন করেন। দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে লব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতার সফল প্রয়োগে তাঁর নিরলস কার্যক্রম ও প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়।
পেশাগত পরিচয়ের পাশাপাশি ড. মোঃ শাহ কামাল খান কবি, গল্পকার ও উপন্যাসিক হিসেবে ইতিমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত সাহিত্য অনুরাগী। সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে অবাধ দখল রয়েছে তাঁর। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ প্রভৃতি ক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থ "মাতৃভূমি"-তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লেখা প্রকাশ পেয়েছে; সেই বিশেষায়িত গ্রন্থে তাঁর লেখা কবিতা "ঐতিহাসিক ১৭ই মার্চ" স্থান পেয়েছে যা সত্যিই অনন্য ও বিরল। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) এসোসিয়েশন কর্তৃক প্রকাশিত “ঠিকানা বঙ্গবন্ধু” স্মারকগ্রন্থে তাঁর লেখা প্রবন্ধ “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানঃ এক অবিসংবাদিত নেতার নাম” জায়গা করে নিয়েছে যা প্রশংসনীয়। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র্র্র (বিপিএটিসি) হতে প্রকাশিত স্মরণিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়ে সুধী মহলে অত্যন্ত প্রশংসনীয় হয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং কৃষি কথায় তাঁর বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, সমাজ, দেশ ও কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন লেখা প্রকাশ পেয়েছে। পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও সাহিত্যকে হৃদয়ে লালন করেন একান্ত গহীনে। সমাজ জীবনের বিভিন্ন ঘটনা, দুর্নীতি, অনিয়ম, বৈষম্য, অবিচার, সামাজিক অনাচার প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর লেখনীতে তীব্র প্রতিবাদ লক্ষণীয়। সহজ সরল প্রাঞ্চল ভাষায় ঘটনার বিবরণ এবং রুচিশীল শব্দ বিন্যাস সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। জীবন ঘনিষ্ঠ রচনা সম্ভার নিয়ে তাঁর প্রকাশিত উপন্যাস ”তবু মনে রেখ”, গল্পগুচ্ছ ”তুমি রবে নিরবে” ও কাব্যগ্রন্থ “হিমালয়ের মত দাঁড়িয়ে” পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। এছাড়াও দেশি-বিদেশী লেখকদের যৌথ লেখা সম্বলিত আটটি গ্রন্থে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়ে সুনাম কুড়িয়েছেন।
তিনি বর্তমানে ২০তম বিসিএস (কৃষি) এসোসিয়েশন-এর সভাপতি; কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রোনমি ও বাংলাদেশ কবিতা সংসদ-এর আজীবন সদস্য এবং বিসিএস (কৃষি) এসোসিয়েশন, ২০তম বিসিএস ফোরাম (সকল ক্যাডার), South Asian Climate Outlook Forum (SASCOF), Climate Services User Forum for Agriculture and Water (CSUF), South Asian Meteorological Association (SAMA) এবং South Asian Forum on Agriculture Meteorology (SAFOAM)-এর সদস্য। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাগত সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন। কর্মজীবনের শুরু থেকেই কৃষি পেশাকে একান্ত আপন করে নিয়ে মনের গহীনে স্থান দিয়ে বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এই অসাধারণ প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব।
এআরএস