আইনি লড়াই শেষে টাঙ্গাইল শাড়ির মালিকানা বাংলাদেশেরই থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ১৪টি পণ্যের জিআই সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘যেহতু আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ। অন্য কোনো ভাবে হয়ত সেখানে গিয়েছে, সেই জায়গা থেকে তারা দাবি করেছে। এটা স্বাভাবিকভাবেই কেউ একজন করতেই পারে। নিশ্চই আমাদের দাবি সঠিক এবং আমরা আশা করি টাঙাইল শাড়ি আমাদেরই থাকবে, বাংলাদেশের।’
গত পয়লা ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিলে টনক নড়ে বাংলাদেশের। ঐতিহ্যবাহী পণ্যটির মালিকানা ফিরে পেতে দুই বাংলা-ই দারস্থ হয় আদালতের। এরপরই জিআই পণ্যের তালিকা বাড়াতে তৎপর হয়ে ওঠে শিল্প মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইল শাড়ি, যশোরের খেজুরের গুড়সহ ১৪টি পণ্যের সনদ দিলো শিল্প মন্ত্রণালয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।’
নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে।’
অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়ি ছাড়াও জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা। এতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।
জিআই বা ভৌগোলিক নির্দেশক- স্বীকৃতির মাধ্যমে একটি পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রির সম্পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত হয়। সারাদেশে এমন আরো ৫০০ পণ্যের যাচাই বাছাই চলছে। স্বীকৃতি পেলে আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে যোগ করা হবে ট্যাগ ও লোগো- জানান পেটেন্ট, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি জিআই পণ্যরে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য লোগোর ব্যবস্থা করব। ইতিমধ্যেই আমাদের এই নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে। যখনই এটা হবে আপনারাও জানতে পারবেন। ট্যাগটা যদি হয়ে যায় তাহলে আমাদের এই পণ্যগুলো বাণিজ্যিকীকরণ সহজ হবে।’
আরএস