ভূমিমন্ত্রী

শুধু ভূমি সপ্তাহে নয়, সারাবছরই সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
শুধু ভূমি সপ্তাহে নয়, সারাবছরই সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে

ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, শুধু ভূমি সপ্তাহ উদযাপন করেই বসে থাকলে চলবে না, সারাবছরই সব ভূমি অফিসে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, কোনভাবেই নাগরিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করা যাবে না। ভূমিসেবা পেতে অফিসে আসা প্রত্যেক নাগরিককে সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। সেবাপ্রার্থী কানো জটিলতা না বুঝলে তাকে সহজ করে বুঝিয়ে দিতে হবে। মনে রাখবেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের সেবক। এ দেশের মানুষের টাকায় আপনাদের বেতন-ভাতা হয়।

ভূমি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আজ সকালে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট ভূমিসেবা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ে বুধবার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে হবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে স্মার্ট নাগরিকের পাশাপাশি স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।

চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ সুন্দর চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর করে সাজাতে চাই। এ জন্য চাই চট্টগ্রামবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছি। তিনি বলেছেন, দেশে একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। তিনি কথা রেখেছেন, চট্টগ্রামকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ যদি স্মার্ট ভূমিসেবা সম্পর্কে না জানে তাহলে আমাদের একার পক্ষে এটা অনেক সময়সাপেক্ষ হয়ে উঠবে। ভূমি সংক্রান্ত বেশ কিছু জটিলতা আমরা নিরসন করছি। তবুও আমরা অনেকে জমির অনেকগুলো বিষয় জানি না বলেই সহজ বিষয় জটিল মনে হয়। কম শিক্ষিতদের কথা বাদই দিলাম, উচ্চ শিক্ষিতদেরও একটি বড় অংশ ভূমির অনেক বিষয়ে জানেন না। তাই সরকার এদেশের সব মানুষের জানার জন্য নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ভূমি সংক্রান্ত বেশকিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে। একজন নাগরিক নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করলে ভূমি বিষয়ে মোটামুটি একটি ধারণা লাভ করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের কৃষি জমিতে বড়বড় বিল্ডিং বানিয়ে মানুষ ঘর তৈরি করছে। কিন্তু শুধু ঘর থাকলে হবে না আপনাকে দু’বেলা ভাতও খেতে হবে। তাই কৃষি জমি, নদী ও পুকুর সংরক্ষণের বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নদীর পাড় কোনোভাবেই ভরাট করা যাবে না। যেভাবে মানুষ জমি, পুকুর ভরাট করে ঘর তৈরি করছে তাতে আজ থেকে ৫০ বছর পর আর কোন কৃষি জমি অবশিষ্ট থাকবে না।

এসিল্যান্ড অফিসারদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের অফিসে প্রত্যেক নাগরিকের সঙ্গে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন। তাদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে কিভাবে তা সমাধান করা যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ দেবেন এবং আপনারা জনগণের কাছে স্মার্ট ভূমিসেবার বিষয়টি ভালো করে বুঝিয়ে বলবেন। এতে অদূর ভবিষ্যতে ভূমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা একেবারে কমে যাবে। জনগণকে খুব প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না। তারা ঘরে বসেই সকল সেবা অনলাইনের মাধ্যমে পেতে পারে।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার ভূমি নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এমদাদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায় বক্তৃতা করেন। এসময় অসংখ্য ভূমি সেবাগ্রহীতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সভাশেষে মন্ত্রী ভূমিসেবা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন এবং ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চেক বিতরণ করেন। এছাড়াও মহানগরে ভূমিসেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সার্কেলের ভূমি অফিসের মাঝে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের মাঝে সনদ প্রদান করেন। পরে তিনি ভূমিসেবার সকল স্টল ঘুরে দেখেন। -বাসস

আরএস