আবেদনের ৭ বছর পর সুন্দরবনের মধুকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের আবেদন পর্যালোচনা করে প্রাপ্ত তথ্য জার্নাল আকারে প্রস্তুত করে বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জার্নাল প্রকাশের তারিখ থেকে দুই মাস সময়ের মধ্যে তৃতীয় কোন পক্ষের আপত্তি বা বিরোধিতা না পাওয়া গেলে পণ্যটিকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন প্রদান করা হবে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট সুন্দরবনের মধুকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে (ডিপিডিটি) আবেদন করে। কিন্তু সে সময় এটিকে নিবন্ধিত করা হয়নি।
মাস ছয়েক আগে ভারত সুন্দরবনের মধুকে দেশটির জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন দেয়। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, প্রশাসন ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলায় সুন্দরবনের মধুর জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে ভারত। এর আগে টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়েও একই জটিলতায় পড়েছিল বাংলাদেশ।
স্বীকৃতি দিতে কেন এতো দীর্ঘ সময় লাগল তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, জিআই পণ্যের নিবন্ধনের আবেদন পরীক্ষা শেষে আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে আবেদনকারীকে অনুরোধ করা হয়। ডিপিডিটি`র অনুরোধের প্রেক্ষিতে সুন্দরবনের মধুর পুষ্টিগুণ বিষয়ে বিএসটিআই একটি পরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ডিপিডিটিকে প্রদান করে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্য না পাওয়ায় উক্ত বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। এ বছরের ২৬ জুন সব তথ্য দিয়ে পুনরায় আবেদন করা হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারত সুন্দরবনের মধুকে নিজেদের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও এতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। তাদের মতে, ভারতের উৎপাদিত সুন্দরবনের মধু ভারতের জিআই হিসেবে পরিচিত হবে। আর বাংলাদেশের অংশে উৎপাদিত মধু বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন এই মধু যাবে তখন ভারত ও বাংলাদেশের নাম আলাদাভাবে উল্লেখ থাকবে।
আরএস