আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হলো বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ ওঠার পর তারা নিজেরাই বলছে, পিএসসিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। তবে ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি টিভি পিএসস’র বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে তা বস্তুনিষ্ঠ মনে করছেন না। বরং এ খবরকে উদ্দেশ্যে প্রণোদিত বলে মনে করছেন।
এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা অভিযোগ তদন্ত করব। এজন্য কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে করণীয় ঠিক করা হবে কমিশনের সভায়।
এর আগে ২৪তম বিসিএস পরীক্ষার সময় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। একই ভাবে ২৫, ২৬ ও ২৭তম বিসিএসেও প্রশ্ন ফাঁস হয়। পরবর্তী সময়ে ড. সাদা’ত হোসাইনের নেতৃত্বাধীন কমিশন এসে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর দুই-এক বার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু এবারই প্রথম প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বড় একটি সিন্ডিকেটের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে ভার্বমূতির সংকটের পড়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
পিএসসির একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, বেসরকারি টিভি টিতে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে গত ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত রেলের উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন আগের রাতে ফাঁস হয়েছে। নন-ক্যাডারের পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয় চার সেট। পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে কোন সেটে প্রশ্ন হয় তা লটারি করা হয়, পরে তা পরীক্ষার কেন্দ্রে ও হলে জানানো হয়। তাই কোন সেটে প্রশ্ন হচ্ছে—তা আগের রাতে জানা অসম্ভব। পরীক্ষার আগে যদি প্রশ্ন ফাঁসও হয়, তাহলে ঐ অল্প সময়ে সেট জেনে তা পরীক্ষার্থীকে পড়িয়ে প্রস্তুত করে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি কতটা যুক্তিসংগত, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। প্রশ্নের সেট লটারি করার যন্ত্র ঘুরিয়ে লটারি করে যেটি ওঠে আসে সেটিতেই পরীক্ষা হয়। এখানে কারো হাত নেই। তাই প্রশ্ন যদি ফাঁস হতেই হয় তাহলে চার সেট প্রশ্নই ফাঁস হতে হবে। এই পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।
৩৩তম বিসিএস থেকে শুরু করে ৪৬তম বিসিএসের প্রশ্নও ফাঁস করেছে একটি চক্র—এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির দুই কর্মকর্তার এক জন বলেন, বিসিএসের বেলায় পিএসসির কোনো প্রশ্ন নিয়ে কোনো অভিযোগ আগে আসেনি।
প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে পিএসসির সদস্য হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, পিএসসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এর মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের প্রতিবেদন আমি দেখেছি। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। আর ফাঁসের বিষয়টি প্রমাণ হলে কী হবে—সেটি কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিআরইউ