কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

আদালতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অধিকার আমার নেই

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
আদালতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অধিকার আমার নেই

আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকেল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একবার এ ধরনের আন্দোলন হয়েছিল, সে সময় বাদ দিলাম। কিন্তু দেখেন বাদ দিয়ে কি হলো। ফরেইনে ২ জন, পুলিশে মাত্র ৪ জন নারী সুযোগ পেয়েছে। এখন ফলটা কি দাঁড়াচ্ছে? ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আদালতে যখন কোনো রায় হয়, তখন কিছু করার নেই। কোর্টের বিষয় কোর্টেই সমাধান হতে হবে। তারা (কোটাবিরোধী) আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান চেনে না, সরকার কিভাবে চলে কোনো ধারনাই নাই। তারা শুধু পড়াশোনা করছে, নম্বর পাচ্ছে এটা ঠিক। ভবিষ্যতে তো তারা নেতৃত্ব দেবে, তাদের এটা জানা উচিত।’

কোটার বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আদালতেই সমাধান হবে। তারা আদালতে যাক, বলুক। না, তারা রাজপথেই সমাধান করবে! এখন আমাকে বলছে। আদালত যেখানে রায় দিয়েছে, এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কোনো অধিকার তো আমার নাই। যতক্ষণ আদালত সমাধান না দেবে, কিছু করার থাকে না। এটাই বাস্তবতা। এটা মানতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আন্দোলন করছে, করতেই থাকবে। তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কিছু করতে পারবে না। পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে আইন আপন গতিতে চলবে। আন্দোলনের আগে কোটা বন্ধে ফলে কি হলো সেই রেজাল্টগুলো তো দেখা উচিত।’  

আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি–পুতিরা সুযোগ পাবে না তো কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? এটা দেশবাসির কাছে আমার প্রশ্ন। তারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে যুদ্ধ করেছে, এ দেশ এনে দিয়েছে। এ জন্যই তো আজ সবাই গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পরছে। নাহলে তো পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে বাঁচতে হতো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেখলাম এক মুক্তিযোদ্ধার নাতনী ভর্তি হয়েছে কোটায়, সে বলে কোটা থাকবে না। বাবা, তুই তাহলে চলে আয়। তোকে তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া উচিত। লজ্জা থাকলে আগে পড়াশোনা বন্ধ করে তারপর বলত। এটা বিচিত্র এটা দেশ। ছয় ঋতুর দেশ তো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন (২০১৮) যারা আন্দোলন করেছিল তখন অনেকগুলো মেয়ে এই আন্দোলনে ছিল। যে নারীরা আন্দোলন করেছিলেন, তারা কি চাকরি পেয়েছে। তারা কি প্রিলিমিনারিতে জায়গা পেয়েছে? আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের সব এলাকা সমান উন্নত না। অনেক অনগ্রসর এলাকা তো আছে। তাদের কি কোনো অধিকার থাকবে না? এ জন্যই তো জেলা কোটা আছে। কোটা বন্ধের পর যদি হিসাব নেন, ২৩ জেলায় কোনো মানুষ পুলিশে চাকরি পায়নি। ৪২ বিসিএসে আমরা বিশেষ পরীক্ষা নিয়ে ডাক্তার নিয়েছিলাম। এই সেক্টরে বরাবরই আমরা দেখি মেয়েদের সংখ্যা বেশি। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে তো তারা পিছিয়েই আছে। এতে লাভটা কি হলো?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটা যে সব সময় সব পূর্ণ হয় তাও না। যেটা বাদ থাকে সেটাও তো দেওয়া হয়। সেখানে অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা অগ্রাধিকার পাবে। কোটা আর মেধা তো এক জিনিস না। তাহলে কি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মেধাবি না, রাজাকারের নাতিপুতিরা মেধাবি? তারা তো পরাজিত হয়েছিল। তাদের মেধাটা কোথায়?’

আরএস