বাধ্য না হলে বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের দাম সরকার বাড়াবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান। তিনি একইসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বেও রয়েছেন।
মানুষ গ্যাস বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ চায়। একই সঙ্গে চায় মূল্য যাতে না বাড়ে। কিন্তু গত ১৫ বছরে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম ১৮-১৯ বার বেড়েছে। গ্যাসের দাম ১০-১২ বার বেড়েছে। সামনের দিনগুলোতে মানুষ কিছুদিন পরপর মূল্যবৃদ্ধি থেকে স্বস্তি পাবে কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা বাধ্য না হলে মূল্যবৃদ্ধি করবো না। আজ যে সিদ্ধান্ত (বিইআরসির বাইরে সরকার আপাতত দাম বাড়াবে না) নেওয়া হয়েছে সেটা সেই কারণেই। আপনাদের এই প্রত্যাশা সম্মান করার জন্য। যদিও আইনে সরকারকে দাম বাড়ানোর ক্ষমতা দেওয়া আছে। বিইআরসির বাইরে আমরা বলে দিলাম যে দাম এত বাড়লো, এটা আমরা করব না।
তিনি বলেন, ‘এটা একটা জনপ্রত্যাশার সরকার। রাজপথে আত্মদানের পর এই সরকার এসেছে, তাই অনেক কিছুই আপনারা পরিবর্তন দেখতে পাবেন।’
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম যদি আর না বাড়ে বুঝতে হবে আমরা ভালো কাজ করছি। কিন্তু বিদ্যুতের দাম যদি আবার বাড়তে থাকে, তাহলে ভালো কাজটা কীভাবে করলাম? পরিসংখ্যান দিয়ে আপনাকে আর মূল্যায়ন করা হবে না।’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যে লাখ লাখ মানুষ বেরিয়ে এলো, এর মানে আমরা যে কাজ করছি এটা তাদের পছন্দ নয়। আমরা অনেক গল্প বলেছি, এ গল্প মানুষ বিশ্বাস করেনি। এজন্য মানুষ নেমে এসেছে। আমরা বলেছি গাল-গল্পের দিন শেষ। মানুষ যেটা চায় মানুষ যেভাবে খুশি হয় সেদিকেই আমাদের যেতে হবে। জনপ্রত্যাশা পূরণে আমাদের যা যা করণীয় আমরা করবো।’
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুইক রেন্টাল, গ্যাস সরবরাহ সংকটসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এনার্জি সিকিউরিটি অব বাংলাদেশ একটা পজিশন পেপার তৈরি করতে বলছি ওনাদের। যেটা আমরা উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে যাব।
যে কর্মকর্তারা আগের সরকারের বিভিন্ন অনৈতিক বিষয়কে সাপোর্ট করে করেছেন। তাদের যদি আবার দায়িত্ব দেন পজিশন পেপার তৈরি করার জন্য, সেটা কতটুকু নৈতিক হবে- জানতে চাইলে বিদ্যুৎ-জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, নিজামুদ্দিন আউলিয়া এক সময় ডাকাত ছিল না? মানুষকে পরিবর্তনের সুযোগ দেবেন। ধরেন একটা খুব খারাপ লোক আমি জানি, কিন্তু ওনার তো একটা অভিজ্ঞতা আছে। যারা খারাপ কাজ করে তারা কিন্তু খুব ভালো জানে। আমার জায়গায় আপনি হলে কি করতেন? আমি ওনাকে রাখলাম কিন্তু উনি আমার সঙ্গে ভালো আচরণ করলেন, এটা কি ভালো? নাকি একটা একজন শিক্ষানবিশকে আনলাম সে কিছুই জানে না সে তো উল্টা আরও বড় ক্ষতি করল।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা কোন প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার না। আমাদের কাছে আশা করবেন, আমরা জনপ্রত্যাশাটাকে পূরণ করব। আমাদের ওপর যে একটা আমানতদারী দেওয়া হয়েছে ছাত্ররা যেটা রক্ত দিয়ে এনেছে, সেটা আমরা রক্ষা করব।
আরএস