আজ ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৪, ১১:৫৮ এএম
আজ ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস

আজ ৩ নভেম্বর, ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতা—বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।

সূত্র জানায়, কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জাতীয় চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনাস তার ‘বাংলাদেশ অ্যা লিগ্যাসি অব ব্লাড’ বইয়ে লিখেছেন, শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার পরপরই জেলখানায় জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনাটি এমনভাবে নেওয়া হয়েছিল যাতে পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তা আপনা-আপনি কার্যকর হয়।

নৃশংস এ ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা হলেও দীর্ঘ ২১ বছর তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া থমকে ছিল। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার মামলার প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করে। দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় বিচার কাজ চলার পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে শাস্তি ও পাঁচজনকে খালাস দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন আসামির মধ্যে দুজনকে এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চারজনকে খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করলে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।

যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে:

জেলহত্যা দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি সামনে রেখে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান সাবেক প্রতিমন্ত্রী তানজীম আহমদ সোহেল তাজ। আজ এই দাবিতে পদযাত্রা করে যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মারকলিপি দেবেন জানিয়ে তাতে অংশ নিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগও দিবসটি পালনের জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে তার দল।

বিআরইউ