বাবা সাদেক হোসেন খোকাকে নিয়ে ইশরাকের আবেগঘন স্ট্যাটাস

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪, ১২:০০ এএম
বাবা সাদেক হোসেন খোকাকে নিয়ে ইশরাকের আবেগঘন স্ট্যাটাস

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।

তিনি লিখেন, ২০১৩/১৪ সালে খুনি হাসিনার কারাগারে বিনা চিকিৎসায় বন্দি থাকার সময় তার শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছিল। বারবার কোর্টের কাছে আবেদন করলেও সাড়া মেলেনি। পরে ফ্যাসিস্ট লীগের দালালরা বলে, ‘ভুল চিকিৎসা’ হয়েছে। যেমনিভাবে ১৯৯৯ সালে গুলি করে বলেছিল, ‘গায়ে গরুর রক্ত’ মেখেছেন। তখন ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দটি সুশীলদের মনে ছিল না। রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।

প্রসঙ্গত, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ১৯৭১ সালে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি যুদ্ধে গিয়েছিলেন মাকে, এমনকি পরিবারের অন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে। ভারতের আগরতলায় যুদ্ধের ট্রেনিং নেন কর্নেল খালেদ মোশররফের নেতৃত্বাধীন দুই নম্বর সেক্টরে। প্রশিক্ষণ শেষে মেজর হায়দারে নেতৃত্বে কুমিল্লার সালদা নদী ও মন্দবাগ এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন সাদেক হোসেন খোকা। পরে তাঁকে কমান্ডারের দায়িত্ব দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়।

১৯৬৮-৬৯ সালে সাদেক হোসেন খোকা আইয়ুববিরোধী গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে পরিচালিত আন্দোলনে তরুণ-যুবকদের মধ্যে সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন অগ্রভাগে। ১৯৭৭ সালে বিপুল ভোটে ঢাকা পৌরসভার কমিশনার নির্বাচিত হন তিনি। নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও প্রথম সারিতে ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। নয় বছরের দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৯১ এর নির্বাচনে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হারিয়ে টক অব দ্য কান্ট্রিতে চলে আসে তার অবস্থান। নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের।

পরে ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকা আবারও নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়কের দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বে পরের পাঁচ বছর সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাকায় রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। একটি প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত হয়েও রাজপথ ছাড়েননি তিনি। ২০০১ সালে চতুর্থ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মৎস ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেন সাদেক হোসেন খোকা। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। বাংলার এই বীরকে ভৌগলিক সীমানার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে হয় ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর।

ইএইচ