ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা খাতে ব্যয় প্রায় ২৮০০ কোটি চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নির্বাচনের অগ্রাধিকারের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনের জন্যও প্রায় ৩ হাজার কোটি অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আরও খাত রয়েছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা সরকারের কাছে ২ হাজার ৭৯৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা চেয়েছি সংসদ নির্বাচনের জন্য। আমাদের এটা প্রাথমিক চাহিদা থাকলেও তা যাচাই-বাছাই করা হবে এবং ইসি সচিবালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর পূর্ণাঙ্গ একটা পরিমাণ চূড়ান্ত হবে।
নির্বাচন খাতে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনের জন্য ৫ হাজার ৯২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার টাকা সরকারের কাছে চেয়েছে ইসি। ভোটার লিস্ট প্রস্তুত, জাতীয় পরিচয়পত্র মুদ্রণ ও বিতরণের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ২৫ লাখ ০৫ হাজার টাকা, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৭০ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৭০ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৭১ হাজার এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৪০ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
আগের ১২ নির্বাচনের যত ব্যয়:
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন: ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ২৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোট ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। পরে তা আরও বেড়েছিল।
দশম সংসদ নির্বাচন: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটে মোট ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২৬৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় ৮১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে ব্যয় হয় ১৮৩ কোটি টাকা। এ নির্বাচনে ১৪৭ আসনে ভোট হয়, ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একক প্রার্থীরা। অর্ধেক এলাকায় ভোট করতে হওয়ায় বরাদ্দের তুলনায় খরচ অনেক কমে আসে।
নবম সংসদ নির্বাচন: ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ভোটে ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়; সে নির্বাচনে ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি। উপকরণ ও ব্যবস্থাপনাসহ সব খাতে ব্যয় বাড়ার কারণে আগের নির্বাচনের তুলনায় বরাদ্দ বাড়ে দ্বিগুণের বেশি।
বিআরইউ