প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

কারো লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ১১:০১ পিএম
কারো লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, মানবতার সেবায় কয়েক দশক ধরে নিবেদিত আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, বেওয়ারিশ লাশ যেন না থাকে, এটা আমরা কামনা করি। কারো লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের নতুন ভবন আঞ্জুমান জে আর টাওয়ারের উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় অন‍্যান‍্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আলী ইমাম মজুমদার, আঞ্জুমানে মফিদুলের সভাপতি মুফলেহ আর ওসমানী এবং সহ-সভাপতি গোলাম রহমান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা যার যার জায়গায় বেওয়ারিশ হওয়ার থেকে রক্ষা করতে পারি, যাতে তার আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব কাছে থাকে। তাকে যেন সম্মানজনক ভাবে দাফন করা যায়। এতে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ডের কোন ব্যাঘাত হবে না, বরং আমরা তাদের সম্মান জানাবো এই জিনিসগুলো তুলে ধরার জন্য।

নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আজকে আমার সৌভাগ্য এখানে উপস্থিত থাকা। ছোটবেলা থেকেই নাম শুনে আসছি। অদ্ভুত এক নাম, এই নামের কোনো ব্যাখ্যা জানতাম না তার সঙ্গে একটা জিনিস জড়িত। শুধু জানি ‘বেওয়ারিশ লাশ’। এরা কারা কোনোদিন জানি নাই, আজকে চাক্ষুষ দেখলাম। এরা এমন এক জগৎ থেকে ভেসে আসে, একটা লাশ পড়ে থাকলে উঠায় নিয়ে যায়। স্বপ্নিল একটা জিনিস। যত দুর্গম হোক, যত কঠিন পরিস্থিতি হোক ওই নামটি আসে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। এটা আমার কাছে খুব অবাক লাগতো। যার পরিচয় জানা নেই কিন্তু প্রতিদিন খবর আসছে, এখন জানলাম সাড়া দেশ জুড়ে আছে। তাদের কোনো বক্তব্য কখনও কোনো পত্রিকায় দেখি নাই। করেন কিনা জানা নেই কিন্তু আমার নজরে আসে নাই যে এই কাজে কোন বাহবা নিচ্ছেন। কিচ্ছু করে নাই, একেবারে চুপচাপ।

তিনি বলেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ। আমি সত্যিই এটা অনুভব করি। কোভিড-১৯ এর সময় প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ আমি নিজের চোখে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দেখেছি।

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান পেয়ে আমরা গর্ববোধ করি এবং এর কর্মসূচি আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম একটি বাংলাদেশি কল্যাণমূলক সংস্থা যা এতিম ও দুঃস্থদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে, যা দশকের পর দশক ধরে সবচেয়ে দরিদ্রদের সেবা করে আসছে।

আঞ্জুমানের সভাপতি মুফিদুল ইসলাম মুফলেহ আর ওসমানী বলেন, জমির বর্তমান বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকা এবং ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, তারা সরকারের কাছ থেকে ২৬ কোটি টাকা পেয়েছেন, যা বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুদানের পাশাপাশি একটি বড় সহায়তা হিসাবে দেখছেন। ‘আল্লাহ তাদের দান কবুল করুন।’

খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছু সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পরে বিচক্ষণতার সঙ্গে বিষয়গুলো মোকাবিলা করার জন্য সংগঠনের সভাপতির প্রশংসা করেন।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি অনেক পুরনো একটি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের নিবেদিত সেবায় তিনি মুগ্ধ। তিনি বলেন, ‘আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে এখন সবাই চেনে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এখানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের নির্বাহী পরিচালক আবদুল জলিল ও আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।

ইএইচ