কাল ব্রিফ করবেন ভলকার তুর্ক

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে চলমান আন্দোলন ও সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদন সদস্য দেশগুলোর সামনে উপস্থাপন করবেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।

আগামীকাল বুধবার (৫ মার্চ) তিনি ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট আন্দোলন সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, প্রতিবেদনটি জেনেভা থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ইউটিউব লিংকে (https://youtube.com/live/szaCueW3WLs)।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও প্রতিবেদনটি কেন গুরুত্বপূর্ণ

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এই ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে জবাবদিহি, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার সংস্কারের লক্ষ্যে তথ্য অনুসন্ধান ও সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রতিনিধিরা এবং বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের সদস্যরা অংশ নেবেন।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও এ আলোচনায় যোগ দেবেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে বিগত আন্দোলন চলাকালে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে যে অভিজ্ঞতা পেয়েছেন, তা জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সামনে তুলে ধরবেন।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক জানিয়েছেন, তাদের স্বাধীন তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরবে এবং জবাবদিহি, ক্ষতিপূরণ ও মানবাধিকার সংস্কারে ভূমিকা রাখবে।

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে তিনি বলেন, “ফৌজদারি মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার তদন্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। তৎকালীন সরকার এই আন্দোলন ‘নৃশংসভাবে দমন’ করেছে।”

প্রতিবেদনের বিস্তারিত

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) ১১৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে:

সাবেক সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

বিক্ষোভ দমন করতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে আটক, নির্যাতন এবং নিগ্রহের মতো ঘটনা ঘটেছে।

শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে জোরপূর্বক বলপ্রয়োগের শিকার হতে হয়েছে।

রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত একটি স্বাধীন তথ্য অনুসন্ধান মিশন পরিচালনা করে। এই অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে গণআন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিত ও তার তাৎক্ষণিক প্রভাব বিশ্লেষণ করা।

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ মানবাধিকার নীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ইএইচ