সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময় চলে আপন গতিতে, আপন মহিমায়। ছাত্রজীবন আজ অতীত স্মৃতি। সব স্মৃতিই স্বপ্নের মতো, তা কখনও বেদনার কখনও আনন্দের। মানুষ তার জীবনের কোন স্মৃতিই ভোলে না। কেবল একটির পর একটি চাপা পড়ে থাকে। কারোর পক্ষেই সেই পুরানো স্মৃতিতে ফেরা সম্ভব হয় না তা সে যতই মধুর হোক না কেন। তারপরও পেছনে তাকাতে হয়, সামনের দিনের স্বপ্ন দেখতে হয়-যত ছোটই হোক না কেন সে স্বপ্ন বা স্বপ্নের ব্যাসার্ধ।
সন্ধ্যা হলে ঘরে ঘরে কুপি আর হারিকেন জ্বলে যে গ্রামে, কৃষকের ছেলেমেয়েরা কৃষক হবে- এ ধ্যান-ধারণা পোষণ করে যে গ্রামের মানুষেরা সেই গ্রামই আমার গ্রাম। সেই গ্রামের অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বা স্বপ্ন নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নন। তাই কৃষক পরিবারের ছেলে কৃষক হবে এটাই ছিল বাবা-মার স্বপ্ন।
ওই বয়সে স্বপ্ন কি তা বুঝতাম না। রাখালদের সাথে গরু চরানো, খাল-বিলে মাছ ধরা আর মাঝে মাঝে স্কুলে যাওয়া ছিল ছোট বেলার কর্মকান্ডের পরিধি। রাখালদের সাথে গরু-ছাগল চরাতে গিয়ে যখন পড়ন্ত বিকেলে ফাঁকা মাঠে বসে দুরের আকাশ আর মাটির মিশে যাওয়া দিগন্ত দেখতাম তখন মনে হতো পৃথিবীর ব্যাসার্ধ এত ছোট কেন?
গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নৈসর্গিক না হলেও জন্মভূমি নিয়ে কার না গর্ব করতে ভাল লাগে। আমার সেই জন্মভূমির পাশেই আছে আইড়মারির বিল। সেই বিলে ধানক্ষেতের মধ্যে শোলা দিয়ে কত যে মাছ ধরছি তা বলে শেষ করা যাবে না।
দেখা গেল, কোমর পরিমাণ পানিতে মাছ ধরছি হঠাৎ করে পাশ দিয়ে একটা সাপ চলে গেল। প্রচণ্ড ভয় পেতাম। ইন্দ্রনাথের কথা মনে করে আবার সাহসী হয়ে উঠতাম। আবার এমনও হয়েছে চৈত্রের খাঁ খাঁ দুপুরে গোরস্থানের মধ্যে গরু-ছাগল ছেড়ে দিয়ে জাম গাছে বসে আছি। গোরস্থানের মধ্যে দিয়ে সা সা করে বাতাসের আওয়াজে শ্রীকান্তের শ্মশান ঘাটের মরার মাথার খুলির কথা মনে পড়ে গেল। সেখানেও ইন্দ্রনাথের কথা মনে করে নিজেকে সান্তনা দিতাম, ‘ও কিছু না’।
অন্যের গাছ থেকে বাতাবু লেবু পেড়ে ফুটবল বানিয়ে যখন মাঠে খেলতাম তখন যেমন আনন্দ পেতাম তেমনি ধান মাড়ায়ের সময় গরুর পেছনে পেছনে ঘুরতেও প্রচুর আনন্দ পেতাম। আনন্দ পেতাম না শুধু পড়ালেখাতে। এই রোগ আমার মতো অনেকেরই ছিল। এরই মধ্যে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ক্লাস ফাইভ পাশ করে ফেললাম।
হেডস্যার যখন ক্লাস ফাইভ পাশের প্রশংসাপত্র লিখতে গিয়ে বললেন, কিরে, বয়স কত লিখব? কিছুই বলতে পারলাম না। স্যার লিখলেন, ১০বছর ১০মাস ১০দিন। পরবর্তীতে এই বয়সের উপর ভিত্তি করে একটি জন্ম তারিখও হয়ে গেল এসএসসির সনদপত্রে। আসল জন্ম তারিখ চাপা পড়ে গেল নকলের কাছে।
১০ বছর ১০ মাস ১০দিনের সার্টিফিকেট নিয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম দামুড়হুদা পাইলট হাই স্কুলে। মাথাভাঙ্গা নদীর পাড় ঘেষে সুন্দর এক মনোরম পরিবেশে এই স্কুল অবস্থিত। নৌকায় পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করা লাগত। ভরা নদীতে নৌকায় পার হওয়া যেমন ছিল আনন্দের, তেমনি ভয়েরও। মাঝিকে বসিয়ে রেখে দস্যি ছেলের মতো বৈঠা বেয়ে স্রোতের বিপরীতে নৌকা চালানোও রপ্ত করে ফেললাম। কতবার যে বৈঠা থেকে হাত পিছলিয়ে পানিতে পড়ে জামা-কাপড় ভিজিয়েছি, তারপরও মন ভেজিনি। ১৯৭৭ সালের জানুয়ারি মাস। হাই স্কুল জীবন শুরু হলো। মন ভিজে গেল গুণী কয়েকজন শিক্ষকের কারণে। তার মধ্যে ফয়েজ স্যার দায়িত্ব নিলেন গণিতের মতো জঠিল ও কঠিন শাস্ত্রের সাথে আমাদের ভালোবাসা তৈরী করার। তিনি প্রতি সপ্তাহে পচিঁশ নম্বরের টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নিতেন। পঁচিশে পঁচিশ পাওয়া ছিল অন্যরকম এক আনান্দ। অংককে ভালোবেসে ফেললাম। সেই ভালোবাসার ব্যাসার্ধ স্কুল-কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্পর্শ করল।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হয়ে গেলাম। দেখা পেলাম নামকরা সব প্রফেসরদের। তার মধ্যে অন্যতম হলেন, প্রফেসর সব্রুত মজুমদার, প্রফেসর আমিনুল হক বেগ, প্রফেসর ফররুখ খলিল, প্রফেসর শিশির কুমার ভট্টাচার্য, ড. মহাতাব উদ্দিন, প্রফেসর মইন উদ্দীন আহমেদ, প্রফেসর আব্দুস সাত্তার, প্রফেসর আবু সালেহ আব্দুস নূর, প্রফেসর হামিদুল ইসলাম, প্রফেসর জিল্লুর রহমান, প্রফেসর দেওয়ান মুসলিম আলী, প্রফেসর নাজমা সুলতানা, প্রফেসর সামসুল আলম সরকারসহ অনেকে। গর্বে বুকটা আরো ভরে গেল যখন জানলাম এ বিভাগেরই দু’জন শিক্ষককে ‘৭১-এ অসামন্য অবদানের জন্য জাতি তাঁদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করে।
তাঁরা হলেন, প্রফেসর হবিবুর রহমান (একুশে পদকধারী, ১৯৮৪) এবং মজিবুর রহমান দেবদাস (একুশে পদকধারী, ২০১৫)। করোনা যখন আমাদের জীবনযাত্রাকে একেবারে লন্ডভন্ড করে দিল ঠিক সেই সময় আমরা গণিত বিভাগের চারজন স্বনামধন্য শিক্ষককে হারালাম। এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন অধ্যাপক মজিবর রহমান দেবদাস, প্রফেসর ড. শিশির কুমার ভট্টাচার্য, প্রফেসর ড. রশীদুল হক ও প্রফেসর ড. মিরাজ উদ্দীন মন্ডল। এমন এক আতঙ্ক এবং সামাজিক দুরত্বের মধ্যে স্যারেরা বিদায় নিলেন যে শেষ সময়ে প্রিয় মানুষগুলোর মুখগুলোও দেখা হলো না আমাদের।
অধ্যাপক মজিবর রহমান দেবদাস ১৯৩০ সালের ১লা জানুয়ারি জয়পুরহাটের মহুরুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষে ১৯৬৭ সালে ১৬ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে সিনিয়র প্রভাষক পদে যোগদান করেন। অধ্যাপক মজিবর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নকালে ভাষা অন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একটু খেয়ালী প্রকৃতির এবং চুপচাপ থাকতে পছন্দ করতেন। তিনি মনে-প্রাণে একজন অসম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট একটি চিঠি পাঠালে বিশ্ববিদ্যালয় এই চিঠি সেনাবাহিনীকে পাঠিয়ে দেয়। ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ ভোরে পাক সেনাবাহিনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে এসে অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক অজিত রায় ও অধ্যাপক মজিবর রহমান দেবদাসকে ধরে নিয়ে গিয়ে তারা জানতে চায় এখানে কোন হিন্দু শিক্ষক আছে কিনা। মৌনতাপস মজিবর রহমান নির্বিকার চিত্তে বলে দেন, এখানে কোন হিন্দু নাই। জীবন রক্ষার্থে অনেকেই যখন হিন্দু নাম বাদ দিয়ে মুসলিম নাম রাখা শুরু করেছিল তখন এর প্রতিবাদ ও ক্ষোভে আপন মুসলমানী নাম পরিত্যাগ করে তিনি ‘দেবদাস’ নাম গ্রহণ করেন।
এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জানাজানি হলে মুসলিম বিশ্বে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে বিধায় পাক সেনারা অধ্যাপক দেবদাসকে ১৯৭১ সালে ১২ই মে তাকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী ও নাটরে পাকিস্তানী সেনাক্যাম্পে মানুষিক ও শারীরিক অত্যাচার করে। মৃতপ্রায় ও বিকৃত মস্তিস্ক অধ্যাপক দেবদাস ১৯৭১ সালে ৫ সেপ্টম্বর ছাড়া পেয়ে জয়পুরহাটে নিজ বাসভবনে ‘জীবন্ত শহীদ’ হয়ে বেঁচে থাকেন। অধ্যাপক দেবদাস যেভাবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিলেন, এই বাংলাদেশে তার দ্বিতীয় উদাহরণ নেই। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। দেরিতে হলেও ২০১৫ সালে সাহসী এ শিক্ষককে সরকার ২১শে পদক দিয়ে সম্মানিত করেন। অধ্যাপক দেবদাস ২০২০ সালের ১৮ই মে পরলোকগমণ করেন।
আরেক গুণী প্রফেসর ড. শিশির কুমার ভট্টাচার্য ১৯৬৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইনমেরী কলেজ থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। প্রফেসর শিশির কুমার ভট্টাচার্য একজন ক্রিকেটপ্রেমী, সংস্কৃতিমনা, বিনয়ী এবং প্রজ্ঞা সম্পন্ন মানুষ ছিলেন।
অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ টুর্ণামেন্টে গণিত বিভাগের ছাত্রদের সাথে তিনি ব্যাট হাতে মাঠে নেমে পড়তেন। তিনি হৈ চৈ পছন্দ করতেন না। তাই স্যার শ্রেণিকক্ষে ঢুকার সাথে সাথে ছাত্ররা সবাই চুপচাপ হয়ে যেত। তিনি ২০০৫ সালে গণিত বিভাগ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরকালীন সময়ে তিনি মুভমেন্ট ডিজার্ডরে ভুগছিলেন। এরকম একটি কঠিন অসুস্থতা নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি বই লেখেন। উল্ল্যেখযোগ্য কয়েকটি বই: মানুষ ও মহাবিশ্ব, মহাজাগতিক মহাকাব্য, দ্বিমাত্রিক জ্যামিতি, কালের প্রকৃতি ও অন্যান্য। তিনি আইনস্টাইনের জীবন ও আপেক্ষিক তত্ত্বের উপর বই লিখে ২০১৯ সালে মেহের কবির বিজ্ঞান-সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
‘স্টীফেন হকিং ও নিঠুর দরদী’ নামে একটি বই লেখা তিনি শেষ করতে পারেননি। শেষের দিকে স্যারের হাতের লেখায় জড়তা থাকায় ‘স্টীফেন হকিং ও নিঠুর দরদী’ বইয়ের পাণ্ডুলিপির লেখা এতটায় অস্পষ্ট যে, আমরা কয়েকজন শিক্ষক তা উদ্ধার করতে পারিনি। এ গুণী প্রফেসর ২০২০ সালে ১০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
প্রফেসর ড. রশীদুল হক ১৯৩২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মালদহ জেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানার নামোসঙ্করবাটী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অসম্ভব মেধাবী এ শিক্ষক ম্যাট্রিকুলেশন থেকে এমএসসি পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিসহ প্রথম স্থান অধিকার করেন। প্রফেসর রশীদুল হক ১৯৫৭ সালের প্রথম দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে যোগদান করেন।
আমেরিকার নিউ অরলিয়েন্সের টুলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৬৩ সালে টপোলজীর উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে রিডার পদে যোগদান করেন। নব্বই দশকের প্রথম দিকে তিনি আবারও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে সুপার নিউমারারি প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন।
স্যার ক্লাস ঢোকার সময় ঠোটের এক পাশের সিগারেট নিয়ে ঢুকতেন। পুরো ক্লাস সময়ে ঠোটের এক পাশের্^ সিগারেট ঝুলে থাকতো আর স্যার ক্লাস নিতেন। অল্প কথা বলা এ স্যার একদিন ক্লাসে বলছিলেন, গণিতের থিউরি প্রমাণে আমরা ’ধরি’ শব্দটি ব্যবহার করি। তবে কেউ যদি কখনও প্রমাণ করতে পারেন যে, ‘ধরি’ ধরা সঠিক হইনি তাহলে সব থিউরমের প্রমাণ আবার নতুন করে ভাবতে হবে হয়তো। অত্যন্ত মেধাবি এ শিক্ষক ১৯ মে ২০২১ তারিখে লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। মৃতুকালে প্রফেসর ড. রশীদুল হক পাঁচ কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
প্রফেসর ড. মিরাজ উদ্দীন মন্ডল ১৯৪১ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলার তৎকালীন নওগাঁ মহাকুমার মহাদেবপুর থানার কাঞ্চন নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রফেসর মন্ডল ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ থেকে ১ম শ্রেণিতে ১ম স্থানসহ এমএসসি পাশ করেন এবং একই বছরে প্রভাষক হিসেবে উক্ত বিভাগে যোগদান করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে লন্ডনের সারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্লুইড ডাইনামিক্সে পিএই্চডি ডিগ্রী অর্জন করেন।
প্রফেসর মন্ডল ১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে এবং ১৯৯০ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে লিবিয়ার ব্রাইটস্টার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির গণিত বিভাগে প্রায় এক দশক ধরে অধ্যাপনা ও বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গত ৫ এপ্রিল, ২০২১ পরলোক গমন করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে এবং তিন ছেলে রেখে যান।
করোনা তাণ্ডব শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ডিজিটাল বোর্ডের পরিবর্তে ব্ল্যাক বোর্ড এবং হোয়াইট বোর্ড ফিরে এসেছে। একখণ্ড চক বা একটা মার্কার পেন হাতে শিক্ষার্থীদের সামনে স্বশরীরে দাঁড়াতে পারছি। শিক্ষকতা হিসেবে এ দাঁড়ানো প্রায় ২৮ বছর হয়ে গেল। এ দীর্ঘ সময়ে আমার শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকদের পাশাপাশি অনেক সহকর্মী, বন্ধু ও শিক্ষার্থীর সানিধ্য পেয়েছি। তারা আজ অনেকে আছে, অনেকে নেই। স্মৃতির সব পাতা ওলটানো হয়নি। একটির পর আরেকটি চাপা পড়ে থাকা স্মৃতিচারণ শেষও হয়নি। তবু থামতে হবে, শেষ করতে হবে স্মৃতিকথা। দীর্ঘ পথচলায় বিভাগটির অর্জন ও সাফল্য অনেক। এই বিভাগটি তৈরী করেছে বহু কৃতি সন্তান যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আজ সমাদৃত। তাদের অনেকেই এই সম্মিলনে মিলবে, নিয়ে যাবে কিছু রোমন্থন করা স্মৃতি আর স্মৃতিজাগানিয়া এই স্মরণিকা।
লেখক পরিচিতি: প্রক্টর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
এআরএস