জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশর্তই হোক মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা

মোছা. মোমতাজ মহল প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশর্তই হোক মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা

সাধারণত: শিক্ষা হলো জ্ঞানলাভের জন্য একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া এবং ব্যক্তির সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের নিমিত্তে অব্যাহত অনুশীলন। বাংলা শিক্ষা শব্দটি এসেছে education ধাতু থেকে। যার অর্থ শাসন করা বা উপদেশ দান করা।

অন্যদিকে শিক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ education এসেছে ল্যাটিন শব্দ educare থেকে। যার অর্থ বের করে আনা অর্থাৎ ভেতরের সম্ভাবনাকে বাইরে বের করে নিয়ে আসা বা বিকশিত করা।

অতএব শিক্ষার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমাদের বুঝতে নিশ্চয়ই কারো বাকি নেই! অর্থাৎ শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো ব্যাক্তির মূল্যবোধ জাগ্রত করা ও গুণাবলীর প্রকাশ। আর প্রাথমিক শিক্ষা হলো যে কোনো দেশের সার্বিক শিখনের জন্য একটি বুনিয়াদি ও পবিত্র প্রতিষ্ঠান! দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই প্রাথমিক শিক্ষার যাত্রা শুরু হয়েছিল। অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়েও এ দেশের প্রাথমিক শিক্ষার স্বর্ণালী ইতিহাস রয়েছে! এদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুনিয়াদি শিখনকে পুঁজি করে পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিশেষ অবদান রেখেছেন। এ দেশের প্রাথমিক শিক্ষার প্রান্তিক যোগ্যতা মোট ২৯টি। অর্থাৎ নীতি প্রনেতাগণ সহ সমগ্র জাতি প্রত্যাশা করেন প্রত্যেক শিক্ষার্থী অন্তত স্রষ্টার সৃষ্টি ও সকল ধর্মের প্রতি সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল হবে; ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসন অনুশীলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করবে যাতে করে উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হবে।

এছাড়া, জাতীয়তাবোধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় নিজেকে নিয়োজিত করবে; মুক্ত চিন্তার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সৃজনশীলতা সৃষ্টি হবে! এ দেশের ভাষা-সংস্কৃতি, রীতি-নীতি ও ঐতিহ্যকে হৃদয়ে লালন করবে। এছাড়া, উন্নত তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন কিছুর উদ্ভাবক হয়ে উঠবে। সর্বোপরি, জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলের প্রতি সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থানের মানসিকতা অর্জন করবে। এমনি করেই একদিন আদর্শ নাগরিক হয়ে উঠবে এবং জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নেতৃত্ব প্রদান করবে!

কিন্তু, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫৩ বছরে বাস্তবে আসলে আমরা কি দেখছি? এদেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে কি আদৌ সমানভাবে মানসম্মত শিক্ষা অর্জিত হচ্ছে? এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো টেকসই উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে গুণগত শিক্ষার ধারণা ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিশেষভাবে তুলে ধরেছে। এতে গত এক দশকে দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ছাত্র ও ছাত্রী উভয়েরই অংশগ্রহণের হার অভূতপূর্বভাবে বেড়েছে এবং একইসঙ্গে বিদ্যালয়ের সংখ্যাও বেড়েছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষাধারার সঙ্গে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাধারাও প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি সাধনে এগিয়ে এসেছে।

এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বলা চলে, দেশে প্রাথমিক শিক্ষার পরিমাণগত বিকাশ অনেকখানি হয়েছে। তবে গুণগত ক্ষেত্রে তেমন কোনো উন্নয়নই ঘটেনি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এদেশে ‘পাঁচ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার পরও ৩৬ ভাগ মানুষ অ-সাক্ষর বা প্রাক-সাক্ষর থেকে যাচ্ছে। অথচ প্রতি বছর কেবলই শিক্ষার হার আনুপাতিক হরে বেড়েই চলেছে! বাড়ছে না কেবল গুণগত বা মানসম্মত শিক্ষার হার!

আমরা খুব ছেলেবলো থেকেই একটি বিষয় জেনে এসেছি, পড়া ও লেখা মানে পড়ালেখা! একজন শিক্ষর্থীর পূর্বশর্তই হলো তাকে নিবিড়ভাবে পড়তে ও লিখতে পারতে হবে এবং তা একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সারজীবন চলতে থাকবে। কিন্তু মজার ব্যপার হলো, বর্তমানে বিদ্যালয়গুলোতে আজকাল ক্লাশ বা পড়ালেখার চর্চা অনেকাংশেই কমে গেছে! অথচ শিক্ষার্থীদেরকে সৃজনশীলতার অংশ হিসেবে হোমওয়ার্কের নামে ’’গল্প লেখা’’, ’’কবিতা লেখা’’ বা নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে চিত্রকর্মের কথা উল্লেখ করে দেয়া হয়! যে শিক্ষক নিজেই জীবনে কোনোদিন কবিতা লিখেননি বা গল্প লিখেননি এমনকি শিক্ষার্থীদের উক্ত বিষয়ে কোনো শিক্ষাদান করেননি, তারা কিসের ভিত্তিতে এতটা আশাবাদী হয়ে যান যে তাঁদের শিক্ষার্থীগণ ’’গল্প লেখা’’, ’’কবিতা লেখায়’’ পারদর্শী হবে? বাস্তব চিত্রটিও যেন তাই অত্যন্ত ভয়াবহ!

শিক্ষকের দেয়া এসাইনমেন্ট তৈরির জন্য শিক্ষার্থীরা গুগলে সার্চ দিয়ে তথ্য চুরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। জনৈক লেখক বা কবির কবিতার দু’একটি শব্দ পরিবর্তন করে নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার কাজটি করতে তারা যেন পটু হচ্ছে! বিদ্যালয়ের শ্রেণিশিক্ষক সংশ্লিষ্ট ছাত্রের এহেন প্রতিভা দেখে সাময়িকভাবে খুশি হলেও বাস্তবে যেন তাঁদেরকে চৌর‌্যবৃত্তিই শেখানো হচ্ছে। মোবাইল-ইন্টারনেটের যুগে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা এমনিতেই অনেক কমে গেছে! উপরন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে পাঠদানের পাশাপাশি সরকারি কর্মসূচির বাড়তি দায়িত্ব দেয়া হয় এবং শুধুমাত্র সৃজনশীলতার দোহাই দিয়ে সিলেবাস সম্পন্ন করা হয় তা হলে জাতি কী আশা করতে পারে এ প্রজন্মকে নিয়ে?

সীমিত সম্পদ আর সীমাহীন দূর্ভোগকে সাথে নিয়ে প্রতিটি মুহুর্ত পা করছে এদেশের আপামর জনগণ! শত সমস্যাকে উপেক্ষা করে এই সৃজনশীল পদ্ধতির শিক্ষায় তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলে। অনেক আশায় বুক বেঁধে তারা এভাবেই স্বপ্নের জাল বুনে, “নিশ্চয়ই তাঁদের সন্তানেরা একদিন সংসারের হাল ধরবে!”, “শিক্ষিত সন্তান হয়ে মা-বাবা, দেশ-জাতির নাম অলঙ্কৃত করবে!” সৃজনশীল শিক্ষার বদৌলতে পাবলিক পরীক্ষায় ছেলেমেয়েদের প্রত্যাশিত (কখনো আবার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি) ফলাফল দেখে মা-বাবা সাময়িকভাবে বড্ড খুশি হলেও বেলাশেষে তারা যেন একরাশ কালো অন্ধকারে দিনানিপাত করে।

সৃজনশীল শিক্ষা ব্যবস্থার এ যুগে প্রতি বছর যেভাবে পাশের হার ও ভালো রেজাল্টের হার বাড়ছে, সে অনুপাতে আদৌ কি তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে? অথবা সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিতে বেড়ে ওঠা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কি স্ব-শিক্ষিত হতে শিখছে? তাদের রেজাল্টের যে গুরুত্ব সেভাবে কি তারা আত্নবিশ্বাসী হতে পারছে?

তবে কি এ শিক্ষা কেবলই সান্ত্বনার? নাকি একটি প্রজন্মের কাছে নিছকই এক প্রহসন মাত্র?

একজন শিক্ষার্থী কি বিষয়ে পড়তে চায়, সেই দিকে কারো কোন গুরুত্ব থাকে না বরং এ দেশে শিক্ষার্থীদের চেয়ে শিক্ষকদের ও অভিভাবকদের মতামত বেশি গুরুত্ব পায়! ফলশ্রুতিতে নিজের ইচ্ছা ও পছন্দ মোতাবেক শিক্ষার্থী আনন্দের সাথে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। এজন্য অধ্যয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর মনোযোগ থাকে না এবং আশানুরূপ ফলাফল লাভে ব্যর্থ হয়।

সময়ের প্রয়োজনে মানসম্মত শিক্ষার ক্ষেত্রে কতগুলো বিশেষ পূর্বশর্তের কোনো বিকল্প নেই।

যেমন: শিক্ষকদের বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান, নেতৃত্ব, শিক্ষণসামগ্রী, মূল্য যাচাই, শিক্ষা নীতি ও পরিকল্পনা, বহিস্থ প্রশাসন, অর্থায়ন এবং সর্বোপরি নৈতিকতা সম্পর্কে বিশেষ প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া বাংলাদেশে একমুখী শিক্ষা অর্থাৎ বৈষম্যহীন পুরো দেশে সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা উচিত, যেখানে কিন্ডার গার্টেনসহ ইংলিশ মিডিয়ামের সিলেবাসও নির্দিষ্ট করা উচিৎ। ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ অথবা অন্য যে কোনো নাম এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং প্রান্তিক যোগ্যতা সমূহ অর্জনের নিমিত্তে শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবকসহ নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একটি অর্জন যোগ্য সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্পই নেই। অন্যথায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আদৌ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না। যে কোনো মূল্যেই বিদেশে মেধা পচার রোধ করতে হবে। 
অর্থাৎ প্রতি বছর এদেশের ৪২ শতাংশ তরুণ বিদেশে পাড়ি জমায়। এর মধ্যে সিংহভাগ অংশ আর দেশে ফেরেন না। একটি দেশ থেকে মেধাবীর সংখ্যা কমে যাওয়া মানে জাতীয় ক্ষতি নয় কি? প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা সংস্কারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সুশীল সমাজের সমন্বিত উদ্যোগ ও সময়োপযোগী সুষ্ঠু পরিকল্পনার একান্ত প্রয়োজন।

একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে অর্থ বরাদ্দ অপর্যাপ্ত। মান সম্মত শিক্ষার জন্য সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই! আধুনিক ও যুগোপযোগী পর্যাপ্ত সংখ্যক যোগ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, যথার্থ শিক্ষণ-শিখন পদ্ধতি এবং সর্বোপরি অভিভাবকদের গণসচেতনতা!

এ দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, লালিত ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ধর্মীয় চেতনা, বিশ্বাস এবং নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটিয়ে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন যাতে হয়, সেসব দিক বিবেচনায় রেখে পাঠ্যসূচি তৈরি করতে হবে।

অপেক্ষাকৃত দুর্বল অথবা অপেক্ষাকৃত কম মেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নজর দেয়া খুবই জরুরী। একই সাথে, সকল শিক্ষার্থীর জন্য সার্বজনীন উপবৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এদেশের ইতিহাসের সাথে অনেক ত্যাগের ইতিহাস জড়িত। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার ফসল এই ছোট্ট বাংলাদেশ। বিগত ৫৩ বছরে অনেক প্রত্যাশিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী আমরা! দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত হয়েও শৈশবের অনেক সুখ স্মৃতি রয়েছে আমাদের প্রত্যেকের। মনে পড়ে সেই রঙিন দিনগুলো- সেই সময় যাঁদের স্নেহে আমরা লালিত হয়েছি। তাঁরা হলেন আমার শ্রদ্ধেয় বাবা-মা ও শিক্ষকগণ। অনেক দূর্গম পথ পার করে এসেছি কিছু সুখে, কিছু দুঃখে। স্মৃতিগুলো সব অবগুণ্ঠনে আছে বুকের অতল গভীরে! খুব মনে পড়ে ফেলে আসা দিনগুলির কথা, যখন স্কুলের মাঠটিতে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা, খেলা আর শিক্ষকদের চোখ রাঙানো বকুনি খেতাম। সবই যেন আজ স্মৃতি। আশির দশকে আমাদের সময়ে তেমন অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হলেও শিক্ষক-ছাত্রদের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক যেন খুব মনে পড়ে। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষার্থীদের যে দায়িত্ববোধ ছিল, তা এখন অনেকাংশেই অমূলক মনে হতে পারে এই প্রজন্মের কাছে! মা-বাবার মতো অধিকার আর দায়িত্ব-কর্তবোধ যেন তৎকালীন স্বল্প বেতনের শিক্ষকগণ সারাজীবন যেন ’মহান’ হয়ে স্থান করে নিয়েছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের মনের মুকুরে!

সারা পৃথিবীজুড়ে আজ যে অস্থিরতা, অবিশ্বাস, হত্যা, ধ্বংস তা কিসের ইংগিত বহন করে? আমরা কি তাহলে আমাদের সন্তান তথা শিক্ষার্থীদের অঙ্কুরিত স্বপ্নগুলো নিজেরাই ধ্বংস করে দিচ্ছি? নক্ষত্রের পতনতো হবেই আজ হোক আর আগামীতে। সন্ধ্যা ঘনাবে বলে তার জন্য আজ তো পথ বন্ধ করতে পারি না। আমাদের যতটুকু আলো আছে আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের কাছ থেকে যে আলোর ছটা পেয়েছিলাম তা কিছুটা হলেও যদি, সে আলো ছড়াতে পারি আমাদের প্রিয় সোনামনিদের মাঝে। সামান্যটুকু হলেও কারো মুখের হাসিটুকু ধরে রাখতে যদি পারি- তবেই তো সফল হবে শিক্ষক হয়ে মহান পেশার মানুষ হিসেবে নিজের স্থান করে নেয়ার।

সুতরাং বৈষম্যহীন সমন্বিত শিক্ষা, বিশ্বমানের শিক্ষাক্রম, মানসম্মত শিক্ষকদের জন্য দ্রব্যমূল্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ প্রদান খুবই জরুরী। যেহেতু মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষা বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়, তাই কেবল পরিমাণগত নয়; বরং সকলের মানসম্মত শিক্ষার ওপর আমাদের জোর দেয়া এখন সময়ের দাবী! সর্বোপরি, আমাদের প্রত্যেককেই মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে যে, জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশর্তই হোক বৈষম্যহীন/মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা!

লেখক: প্রধান শিক্ষক চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বগুড়া সদর, বগুড়া।

ইএইচ