মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ. ম রেজাউল করিম বলেছেন, আল-জাজিরার `অল আর প্রাইমিনিস্টার ম্যান` নামে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল এর উদ্দেশ্য ছিলো র্যাবকে বিতর্কিত করা ও র্যাবের ইমেজ নষ্ট করা।
ইদানীং আয়নাঘর নামে আরেকটি উপাখ্যান শুরু হয়েছে। এখানে টার্গেট স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী। কেউ কী দেখেছেন, এটা আয়নাঘর কী না? উপরের থেকে নাকি ছবি নেয়া হয়েছে।
এটা কী আমার বাড়ির ছবি নাকি অন্য কারো বাড়ির ছবি। একদল দেশদ্রোহী দেশে ও দেশের বাহিরে বসে আমাদের দেশের শক্তি সেনাবাহিনী ও র্যাবকে বিতর্কিত করে রাষ্ট্রকে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিয়ে যেতে চায়।
সোমবার (২৯ আগষ্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে `রক্তাক্ত আগষ্ট ও মায়ের কান্না` শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
শ.ম রেজাউল করিম বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ওয়াশিংটনে একটা পত্রিকায় আর্টিকেল লিখে বাংলাদেশকে কোন সাহায্য না করার আহ্বান জানিয়েছিলো। ইংল্যান্ড-আমেরিকার সহযোগিতায় বিএনপি ক্ষমতায় আসতে চায়। তাদের সেই স্বপ্ন দিবাস্বপ্নই থেকে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মানবাধিকার সুরক্ষার একমাত্র ব্যক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রথম মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছে।
৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িতদের বিচার তিনিই করেছেন। ২য় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিলো রাষ্ট্রপতি, তার শিশু পুত্র ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের হত্যার মাধ্যমে যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিলো সেটির বিচারও তিনি করেছেন।
২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলার বিচার, নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের বিচার, বিডিয়ার হত্যাকান্ডের বিচার, বিশ্বজিৎ হত্যা, টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টারসহ দেশের যেখানেই মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তিনি তার বিচার করেছেন।
অপরদিকে খুনীদের অপরাধের বিচার করা যাবে না। এটাকে কারা আইনে রুপান্তর করেছিলেন? বঙ্গবন্ধু খুনীদের ইনডেমনিটি আইনের মাধ্যমে খালাস দেন জিয়াউর রহমান আর অপারেশন ক্লিন হার্টে ৫৮ জনকে হত্যার খুনীদের জন্য যে দায়মুক্ত আইন করা হয়েছিলো, সেটি করেছে খালেদা জিয়া।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে সেনা অভ্যুত্থান ছিলো না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে জিয়াউর রহমানের সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা ছিলো। অস্ত্র কেনা থেকে শুরু করে হত্যা পরিকল্পনা সব জায়গায় তার উপস্থিতি দেখা যায়।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার কন্যাকে বিভিন্নভাবে দেশে আসতে বাধা দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনের মূল নায়কদের জনগণের সামনে উম্মোচন করতে হবে ৷ না হয় আবার আরেকটি আগস্ট সংঘটিত হবে।
বাংলাদেশ অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বোয়াফ) আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, নরসিংদী রেলস্টেশনে এক মেয়ে টাউজার পরে বের হয়েছিলো সেখানে জামায়াতী এক মহিলা তাকে মারধর করেছে। এবং অন্যান্যদের ডেকেও মারধর করিয়েছে।
মেয়েটির পোষাক আমি টেলিভিশনে দেখেছি। এর মাঝে কোন অশালীনতা নেই। আমি নিজে বাঙালি। আমি মনে করি শাড়ি এবং টিপ আবহমান বাংলার পোশাক। কিন্তু শাড়ি পরে সবসময় কাজ করা যায় না। মাঝে মাঝে বিকল্প হিসেবে সালোয়ার, কামিজ, জিন্সের টাউজার ইত্যাদি পরা যায়।
জিন্সের টাউজার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পোশাক। আমার মেয়ে পরে, আমার আত্মীয় স্বজনরাও পরতো। আমাদের দেশটি মুসলিম রাষ্ট্র নয়, এটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্মীয় দিকটি টেনে পোশাক পরার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়।
তৈমুর লং, চেঙ্গিস খানের সাথে জিয়াউর রহমানের তুলনা করলে বেশি বলা হবে না। ১৯৭৫ সালে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি হত্যা করেছেন।
তার খুনী রক্ত তার ছেলের মাঝেও রয়ে গেছে। ২১ আগষ্টের মূল আসামি ছিলো তারেক জিয়া, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর, হারিস চৌধুরী।
বোয়াফ সভাপতি কবীর চৌধুরী তম্ময়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি নবী নেওয়াজ খান, লেখক, গবেষণক ও কলামিস্ট ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার।
টিএইচ