শাওনকে যুবলীগ কর্মী দাবি করে আ.লীগের বিক্ষোভ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২, ০১:০২ পিএম
শাওনকে যুবলীগ কর্মী দাবি করে আ.লীগের বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত শাওন যুবদলের নয় যুবলীগ কর্মী দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে নিহতের স্বজন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) রাতে ফতুল্লার নবীনগর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন সড়ক ঘোরেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য একটি কুচক্রী মহল পায়তারা করছে। 

নিহত শাওনের হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন তারা। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলে অংশ নেন।

ওই বিক্ষোভ মিছিলে আরও অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আলীম শেখ, বক্তাবলী ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ফকির চাঁন বেপারী, এনায়েতনগর ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল জলিল, আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান শেখ, শাওনের মামা মীর হোসেন, শহিদ মোদিসহ শতাধিক নেতাকর্মী।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শাওন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর চাচাতো ভাতিজা। শাওন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, শাওনকে যুবলীগের কর্মী দাবি করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল করেছেন বলে আমি শুনেছি। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না।

এদিকে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মামুন মাহমুদ বলেন, শাওন যুবদলের কর্মী ছিলেন। বিভিন্ন সময় বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। শাওনের দূর সম্পর্কের চাচা আওয়ামী লীগ নেতার চাপে এখন তারা বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করছে।

নিহত শাওনের মা ফরিদা বেগম জানান, শাওন তার চাচা শওকত আলীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করত। চাচার কথার বাইরে এক পা-ও হাটেনা। বাড়ির কাছে শহিদুল্লাহর ওয়ার্কশপে কাজ করত সে। কাজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয় শাওন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেলগেট এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় শাওন নামে যুবদলের ওই কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এরপর শাওনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাওনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের পূর্ব গোপালনগর এলাকায়। তিনি সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী ছিলেন বলে দাবি বিএনপির। ফতুল্লার এনায়েতনগর এলাকায় একটি কারখানায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় দেড় ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে শাওনের মৃত্যু ছাড়াও পথচারী-নারীসহ আরও ২৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটায় পুলিশের সদস্যসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।


টিএইচ