বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিশ্বে শিশু হত্যা ও নির্যাতন বিরোধিতার প্রতীকের নাম হয়ে থাকুক রাসেল। রাসেল আমাদের অন্তরে বেঁচে থাকবে চিরদিন।
খুনিদের অপচেষ্টা শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে যুবলীগ চেয়ারম্যান আরও বলেন, কিন্তু আজ আমরা রাসেলের জন্য শোকে বিলাপ করবো না। খুনিরা ওকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ওদের অপচেষ্টা শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে। রাসেল আজ বাংলার শিশু-কিশোর-তরুণদের ভালবাসার নাম।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের উদ্যোগে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেল-এর ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি।
সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, নির্যাতিত-নিপীড়িত-লাঞ্ছিত শিশুদের প্রতীক হয়ে গ্রাম বাংলার প্রতিটি লোকালয়ে রাসেল আজ ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানবিক চেতনা আর শুভবুদ্ধিসম্পন্ন যুবসমাজ রাসেলের বেদনাকে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলার প্রতিটি শিশুর মুখে হাসি ফুটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেখ রাসেল আজ আবর্তিত হয়েছে সকল শিশুদের উপর নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে। শুধু একজন রাসেল নয়, রাসেল কিন্তু পৃথিবীর হাজার হাজার রাসেলের প্রতীক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। পৃথিবীতে প্রতিবছর হাজার হাজার রাসেলের অকাল মৃত্যু ঘটে। তিনি আরও বলেন-শেখ রাসেল দুনিয়ার সকল নির্যাতিত, নিপীড়িত শিশুর সাথে সাথে জায়ান চৌধুরীরও প্রতিচ্ছবি হয়ে আজ আত্মপ্রকাশ করেছে। শিশুদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের আদর্শিক এবং নৈতিক দায়িত্ব। অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ুক শেখ রাসেলের মর্ম; শেখ রাসেলের চারিত্রিক গুণাবলি ও তাঁর নামের প্রতীকী তাৎপর্য অনুধাবন করে বাংলার প্রতিটি যুবক-যুবতি জাগ্রত প্রগতিশীল যুবসমাজ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করুক, এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান কুশিলব ছিলেন খন্দকার মোস্তাক এবং তার প্রধান সহযোগী ছিলেন খুনি জিয়াউর রহমান। আজকে জিয়াউর রহমানের দল মানবাধিকারের কথা বলে, জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ক্ষান্ত হন নাই। তিনি নিজের ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করতে হাজার হাজার সেনা কর্মকর্তা ও জোয়ানকে বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছেন। এইভাবে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তার দল বিএনপি আজ মানবাধিকারের কথা বলে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির সময় আওয়ামী লীগের সমাবেশে বোমা ফাটানো হয়েছে। কিন্তু আজকে আওয়ামী লীগের সময় বিএনপি বিভিন্ন বিভাগে, জেলায় সমাবেশ করছে বিনা বাধায়। এটাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শন।
তিনি বলেন, বিএনপির অবস্থা হয়েছে উড়ন্ত তেলাপোকা আর বর্ষাকালের ব্যাঙের আওয়াজের মত। আওয়াজ দিয়ে লাভ নেই বিএনপিকে মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগ লাগবে না, যুবলীগ একাই যথেষ্ট।
সেখ সালাহউদ্দিন জয়েল এমপি বলেন, ১৯৭৫ সালের ঘাতকদের যেন বিচার না হয় সে জন্য খুনি জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এবং খুনিদের বিভিন্ন মিশনে চাকরি দিয়ে পুরষ্কৃত করেছে। এতে প্রমাণিত হয় জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দলকে সুসংগঠিত এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। উনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য বাকি কাজটুকু আমাদের করতে হবে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, সেই দিনের জামাত-শিবির আজকের বিএনপি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়ার প্রত্যক্ষ মদদে ১৫ আগস্টের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল কিছু বিপথগামী সেনারা। ১৯৭৫ সালের খুনি জিয়া আর ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত খুনি তারেক জিয়া বাংলার ইতিহাসে দুটি কলঙ্কিত নাম। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, সিরিজ বোমা হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ টাকা পাচারের মূলনায়ক তারেক জিয়া আজকে বিদেশে বসে বাংলাদেশকে নিয়ে, এদেশের মানুষকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে যুবলীগ এটাই হোক শেখ রাসেলের জন্মদিনের অঙ্গীকার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলে ফাহিম, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. নবী নেওয়াজ, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী এমপি, মো. এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, মো. জসিম মাতুব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহা. বদিউল আলম, মো. রফিকুল আলম সৈকত জোয়ার্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ
ইএফ