সামনে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই: মির্জা ফখরুল

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২২, ০৮:৩৮ পিএম
সামনে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সামনে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিপন্ন। এমতাবস্থায় আগামী ১০ ডিসেম্বরের দিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষ তাকিয়ে আছে। সমাবেশ যেকোনো মূল্যে আমাদের সফল করতে হবে। মামলা-হামলা গ্রেপ্তার উপেক্ষা করে আমাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ সোমবার বিকেলে এক মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) সঙ্গে এ মতবিনিময় করে বিএনপি।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। এখন আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিপন্ন। আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করে দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। আসলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই এটা করে। এটা তাদের গুণ। তারা ভয় পায় ও লুট করে। তারা ভয় দেখিয়ে শাসন করে। তারা জনগণের সঙ্গে থাকে না বরং প্রতারণা করে। ভুল বুঝিয়ে ভোট নেয়। এখন তাদের আসল চেহারা বের হয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারা দেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে। বিগত ৯টি বিভাগীয় গণসমাবেশে লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। নদী সাঁতরে, পায়ে হেঁটে, সাইকেলে চড়ে, চিড়া-মুড়ি গুড় নিয়ে সমাবেশে অংশ নিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়াকে মুক্ত এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। তারা সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন। তারা কিছুই চাননি। শুধু মুক্তি চান।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বরের দিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষ তাকিয়ে আছে। যেকোনো মূল্যে আমাদের সমাবেশ সফল করতে হবে। মামলা-হামলা গ্রেপ্তার উপেক্ষা করে আমাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে। পেশাজীবীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন বেগবান করতে হবে। অতীতেও পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এখন শুধু তারেক রহমান বা বিএনপির অস্তিত্বের প্রশ্ন নয়, আজকে গোটা জাতির জন্য অস্তিত্বের লড়াই। যদি গণতন্ত্র ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ফিরে পেতে চাই, তাহলে যেকোনো মূল্যে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ সফল করতে হবে।

অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ফ্রি চিকিৎসা, হাসপাতালে পাঠানো ও মেডিকেল টিম, হটলাইন নম্বরসহ বিভিন্ন সেবার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, দেশের গ্রামীণ মানুষ আজ অতীষ্ঠ। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে একটি গোষ্ঠী হামলা-মামলা চালাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ আমাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ মহাসমাবেশে রূপ লাভ করবে। ইতোমধ্যে অনেক লোক ঢাকা আসা শুরু করেছে। পল্টন এলাকায় গেলেই দেখা যাবে লোকে লোকারণ্য। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই সরকারের পতন হবে। অতীতেও তাই হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি না দিলে গোটা ঢাকায় সমাবেশ হবে। সেটা কিন্তু ঠেকানো যাবে না।

বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, প্রকৌশলী আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড. মামুন আহমেদ, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

ইএফ